সাত উইকেটে বাংলাদেশকে হারিয়ে সিরিজ জিতলো শ্রীলঙ্কা। টাইগারদের বিপক্ষে ২৩৯ রানের সহজ টার্গেট তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে শ্রীলঙ্কা। উদ্বোধনী জুটিতে অভিস্কা ফার্নান্দোকে সঙ্গে নিয়ে ৭১ রান যোগ করেন দিমুথ করুনারত্নে। বিপজ্জনক হয়ে ওঠা এই জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার অফ স্পিনে বোল্ড হয়ে ফেরার আগে ২৯ বলে ১৫ রান করেন লঙ্কার অধিনায়ক করুনারত্নে। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুউস ৫৭ বলে ৫২ রান করে। ৪৫ ওভারেই ২৪২ রান করে সিরিজ জিতে নেয় শ্রীলঙ্কা। কুশল মেন্ডিস ৭৪ বলে ৪১ রান করেন। ফার্নান্দো ৭৫ বলে ৮২ রান করে জয়ের ভিত তৈরি করে দেয়। মেহেদী হাসান ১টি ও মুস্তাফিজুর রহমান ২টি উইকেট পায়। বাকি আর কোনো বাংলাদেশি বোলার সফল হতে পারেনি।
এর আগে, কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে চরম বিপর্যয়ে পড়ে যায় বাংলাদেশ দল। ৩১ রানে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর ব্যাটিংয়ে নামেন মুশফিক। প্রথম ওয়ানডের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও ব্যাটিং বিপর্যয়ে দলের হাল ধরেন তিনি। তার অপরাজিত ৯৮ রানের দায়িত্বশীল ইনিংসে ভর করে শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে ২৩৮ রান তুলতে সক্ষম হয় টাইগাররা।
১০৩ বলে ৮০ রান করা মুশফিক শেষ দুই ওভারে সেঞ্চুরির জন্য আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন। ৪৯-তম ওভারে লঙ্কান পেসার ইসুর উদানাকে দুই চার ও এক ছক্কা হাঁকিয়ে ১৫ রান আদায় করে নেন মুশফিক।
সেঞ্চুরির জন্য শেষ ওভারে মুশফিকের প্রয়োজন ছিল মাত্র ৫ রান। কিন্তু অসাধারণ বোলিং করেন নুয়ান প্রদীপ। লঙ্কান এ পেসারের বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে ব্যর্থ হন তিনি। শতরানের মাইলফলক স্পর্শ করতে শেষ ২ বলে মুশফিকের প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩ রান। পঞ্চম বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ব্যর্থ হন তিনি। ডিপ স্কয়ার লেগে থাকা ফিল্ডার যখন বল কুড়িয়ে ফেরত পাঠান তার আগে সিঙ্গেল রান নেয়ার সুযোগ পান মুশফিক-মোস্তাফিজ। অবশ্য সেই সিঙ্গেল না নিয়ে মুশফিক যদি শেষ বলে স্টাইকে থাকতেন তাহলে বাউন্ডারি হলেও হতে পারত! সেঞ্চুরির চিন্তা করে দাঁড়িয়ে না থেকে, সিঙ্গেল নিয়ে স্টাইক বদল করেন মুশফিক। আর তাতেই সেঞ্চুরির স্বপ্ন ভঙ্গ হয় এ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানের। শেষ বলে মোস্তাফিজ দুই রান নেয়ায় বাংলাদেশ থামে ২৩৮ রানে। ১১০ বল খেলে ৬টি চার ও এক ছক্কায় ৯৮ রান করে অপরাজিত থাকেন মুশফিক।
এর আগে, লঙ্কান বোলারদের তোপের মুখে পড়ে একের পর এক উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। সৌম্য, তামিম, মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ, সাব্বির, মোসাদ্দেকের অসহায় আত্মসমর্পণের কারণে দলীয় ১১৭ রানে ছয় ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে চরম বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। উইকেটের এক পাশ আগলে রেখে একাই লড়াই করে যান জাতীয় দলের এ নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান। সপ্তম উইকেটে মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে গড়েন ৮৪ রানের জুটি। ৪৯ বলে ছয়টি চারের সাহায্যে ৪৩ রান করে সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন মিরাজ। মিরাজের বিদায়ের পরও উইকেটে অবিচল ছিলেন মুশফিক। টেল এন্ডারদের নিয়ে লড়াই চালিয়ে যান। তবে, শেষ পর্যন্ত তা জয়ের জন্য যথেষ্ট হয়নি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৩৮/৮ (মুশফিক ৯৮*, মিরাজ ৪৩, তামিম ১৯, মোসাদ্দেক ১৩, মিঠুন ১২, সৌম্য ১১, সাব্বির ১১, মাহমুদউল্লাহ ৬, তাইজুল ৩, মোস্তাফিজ ২*)।
শ্রীলঙ্কা: ৪৪.৪ ওভারে ২৪২/৩ (ফার্নান্দো ৮২, ম্যাথিউস ৫২*, কুশল মেন্ডিস ৪২*, কুশল পেরেরা ৩০;মোস্তাফিজ ২/৫০)।
ফল: শ্রীলঙ্কা ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্যা ম্যাচ: আভিস্কা ফার্নান্দো।
Leave a reply