নরসিংদীতে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা, পরীক্ষাতে নিচ্ছে ২৬শ টাকা

|

নরসিংদী
দিন দিন নরসিংদীতে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। গত দুই দিনে শুধু সরকারী হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছেন ২০ জন রোগী। ফলে ডেঙ্গু আতঙ্গ ছড়িয়ে পড়ছে জেলা জুড়ে। ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্ক বাড়লেও সরকারী সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু সনাক্তে পযার্প্ত ব্যবস্থা নেই। নেই রক্তের সেল কাউন্টার মেশিন। তাই রোগীদের বাধ্য হয়েই বেসরকারি ডায়াগনেষ্টিক সেন্টারগুলো ছুটতে হচ্ছে। এদিকে জেলা সিভিল সার্জন বলছে, ডেঙ্গু জ্বরের রোগীদের সবোর্চ্চ গুরুত্ব দিয়ে সেবা দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে ডেঙ্গু জ্বর শনাক্তে রক্তের পরীক্ষার সরকার নির্ধারিত ফি মানছে না ডায়াগনেষ্টিক সেন্টারগুলো। পরীক্ষার সবোর্চ্চ ফি ৫ শত টাকার বদলে রোগীদের গুনতে হচ্ছে ২৬শত টাকা। তাই গরীব ও হতদরিদ্র রোগীরা বিপাকে পড়ছেন। এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি জেলা সিভিল সার্জন অফিস। উল্টো নরসিংদী সদর হাসপাতাল থেকেই তাদের পাঠানো হচ্ছে এসব প্রাইভেট ডায়াগনেষ্টিক সেন্টারগুলোতো।

সরেজমিনে নরসিংদী সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের সাধারণ রোগীদের সাথেই রাখা হচ্ছে। হাসপাতালে নিয়ম অনুযায়ী তাদের সবসময় মশারির ভিতরে রাখার কথা থাকলেও মাশারি ছাড়াই তাদের বেডে রাখা হচ্ছে। যা খুবই ঝঁকিপূর্ন বলে মনে করছেন অন্য রোগীরা। তাদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে।

নরসিংদী সদর হাসপতাল ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে, বিল্ডিংয়ের সামনে পিছনে প্রত্যেকটা জায়গায়ই পানি জমে আছে। এগুলো নিষ্কাশনের নেই কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। যেখানে ডাক্তাররাই মনে করছেন এডিস মশা জন্ম নেয় জমে থাকা স্বচ্ছ পানি থেকে। সেখানে নরসিংদী সদর হাসপাতালের ভিতরের অবস্থাটাই এমন।

ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ফারিয়া আক্তারের মা বিলকিস বেগম বলেন, ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বর্তমানে প্রকট আকার ধারন করলেও সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু শনাক্তে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। ফলে অতিরিক্ত অর্থ দিয়েই আমরা বাইরের বেসরকারি ডায়াগনেষ্টিক সেন্টারগুলো থেকে ডেঙ্গু সনাক্তের পরীক্ষা করছি।

মাধবদীর রায়পুর মাকের্টের নিরাপত্তা কর্মী নাদিম বলেন. প্রচন্ড জ্বর ও মাথা ব্যথা নিয়ে সোমবার হাসপাতারে ভর্তি হয়েছি পরে পরীক্ষা করলে আমার ডেঙ্গু সনাক্ত হয়। হাসপাতালে আমাদের জন্য আলাদা কোন ব্যবস্থা নাই। অন্যসব রোগীদের সাথেই আমাদের রাখা হচ্ছে। আমাদের বেডে কোন মশারির ব্যবস্থা ও করা হয়নি।

নরসিংদী জেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকতা (আরএমও) এম এন মিজানুর রহমান বলেন, ডেঙ্গু জ্বরের রোগীদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সেবা দেয়া হচ্ছে। ডেঙ্গু রোগ নির্ণয়ে সরকার নির্দিষ্ট মূল্য তালিকা করে দিয়েছে। এর বাহিরে মূল্য বেশি রাখার সুযোগ নাই। আমরা যদি সহজ ও সুন্দর ভাবে ডেঙ্গুর চিকিৎসা করতে পারি এবং রোগীকে প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা করা গেলে ডেঙ্গুতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ডেঙ্গু রোগ সম্পর্কে মানুষের সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে জ্বর আসলেই মানুষ হাসপাতালে আসছে। যার ফলে ডেঙ্গু রোগে মৃত্যুহার ঝুঁকি কমে আসছে।

নরসিংদী সিভিল সার্জন(ভারপ্রাপ্ত) ডা: সৈয়দ আমিরুল হক শামীম বলেন. আমাদের হাসপাতালে রক্তের সেল কাউন্টার মেশিন নেই। আমরা দরিদ্র রোগীদের মাইক্রোস্কোপ দিয়ে সেল কাউন্টার করে দিচ্ছি। হাসপাতালে প্রতিটি রোগীকে ২৪ ঘন্টা মশারিতে রাখার জন্য নির্দেশনা দেয়া আছে। আর ডেঙ্গু রোগীদের বেশির ভাগই ঢাকাতেই আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে শিক্ষার্থী ও চাকুরিজীবিই বেশি। ডেঙ্গু যাতে বিস্তার না করতে পারে এজন্য আমরা সতর্ক রয়েছি। নরসিংদীকে ডেঙ্গু মুক্ত রাখতে জেলা প্রশাসন, পৌর কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য বিভাগ মিলে সমন্বিত প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply