বগুড়া ব্যুরো:
বগুড়ার সদর উপজেলার মহিষবাথান এলাকায় একটি পটলের ক্ষেত থেকে বিরল প্রজাতির বালুবোয়া সাপ উদ্ধার করেছেন স্থানীয়রা।
প্রাণিবিদ্যার অধ্যাপকরা বলছেন, সাপটি ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, পাকিস্তান, ভারত ও শ্রীলঙ্কার বালুময় নদী এলাকায় সাধারণত বিচরণ করে। বাংলাদেশে এর বংশবিস্তৃতির কোনো রেকর্ড না থাকলেও এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো এমন প্রজাতির সাপের দেখা মিললো গেলো কয়েক বছরে।
আহত সাপটি বর্তমানে উত্তরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের পরিবেশবাদী সংগঠন ‘তীর’র সদস্যদের হেফাজতে চিকিৎসাধীন।
টিম ফর এনার্জি অ্যান্ড ইনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ-‘তীর’র সভাপতি আরাফাত রহমান যমুনা নিউজকে জানান, মহিষবাথান এলাকার কৃষি জমি থেকে অজগর সাপ উদ্ধার হয়েছে-এমন খবরে তারা বুধবার রাতে সেখানে যান। সাপটি উদ্ধারের সময় গ্রামবাসীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সেটি কিছুটা আহতও হয়। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসান ডালিমের সহায়তায় তীরের সদস্যসরা সাপটি নিজেদের জিম্মায় নেন।
আরাফাত জানান, সাপটি দেখার পর প্রাণিবিদরা একে বালুবোয়া বলে চিহ্নিত করেছেন। এটিকে বেবি পাইথনও বলা হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Gongylophis conicus. দেখতে অনেকটা অজগর সাপ ও রাসেল ভাইপার সাপের মতো। লেজ মোটা ও ভোটাকৃতির। এরা লম্বায় সাধারণ ২৩ ইঞ্চি হয়ে থাকে।
সরকারি আজিজুল হক কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক আরিফুর রহমান জানান, এটি একটি বিলুপ্ত প্রজাতি, যা বাংলাদেশে সাধারণত দেখা যায় না। যদিও গবেষকরা এর আগে দেশে কয়েক দফা এই প্রজাতির সাপ দেখেছেন বলে বিভিন্ন গবেষণায় উল্লেখ করেছেন। বালুবোয়া ওই এলাকায় কীভাবে এলো কিংবা আগে থেকেই ছিলো কী না এনিয়ে গভীর পর্যবেক্ষণ দরকার। যদিও এই সাপটি দেখতে রাসেল ভাইপার কিংবা অজগরের মতো হলেও এটি খুবই শান্ত প্রকৃতির এবং নির্বিষ প্রকৃতির।
তীর সভাপতি আরাফাত জানান, উদ্ধারের সময় সাপটির শরীরে দুটি ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি ও ভেটেরিনারি সায়েন্সের ডাক্তার হেমায়তুল ইসলাম আরিফের পরামর্শ অনুযায়ী শহরের সেউজগাড়ী এলাকায় এখন চিকিৎসাধীন রয়েছে বালুবোয়াটি। দুয়েকদিনে সুস্থ্য হয়ে গেলে সাপটিকে আবারো প্রকৃতিতে ছেড়ে দেয়া হবে বলেও জানান আরাফাত।
Leave a reply