আগুনে পোড়া রোগীদের চিকিৎসায় বিশ্বের প্রথম ৫শ’ শয্যার হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশে। শুধু এতেই সীমাবদ্ধ নয় এর বিশেষত্ব। এখানে বিশ্বমানের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও দক্ষ চিকিৎসক তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা রয়েছে।
ন্যাশনাল বার্ন ইনস্টিটিউটের অন্যতম কান্ডারি ডা. সামন্ত লাল সেন জানালেন হাসপাতালটি নিয়ে তার স্বপ্নযাত্রার কথা। সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ইনস্টিটিউটের অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ করে উদ্বোধন করা হবে বলে জানালেন তিনি।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজের সাথেই সংযুক্ত আছে বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট। মাত্র পাঁচ শয্যা দিয়ে শুরু হওয়া ইউনিটে এখন রোগী ধারণ ক্ষমতা ১০০ জন। কিন্তু নানাভাবে পোড়া-দগ্ধ রোগীদের স্থান সংকুলানের জন্য এই সংখ্যা যথেষ্ট নয়।
বার্ন ইউনিটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম জানালেন, বর্তমানে দেশে বছর দগ্ধ ও পোড়া রোগী সংখ্যা বছরে ৬ লাখের বেশি। গুরুতর অবস্থার রোগীদেরকে তারা চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। তবে বর্তমান ধারণ ক্ষমতা যথেষ্ট না হওয়ায় মেঝে ও বারান্দায় পড়ে থাকতে হয় রোগীদের।
এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে ঢাকা মেডিকেল কলেজের পাশে চানখাঁর পুল সংলগ্ন জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিশ্বের প্রথম ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউশন।
৪০ বছর আগে বার্ন বিষয়ক একক হাসপাতালের যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেটি বাস্তবায়িত হচ্ছে দেখে বেশ আবেগাপ্লুত ডা. সামন্ত লাল সেন। বললেন, যা হতে যাচ্ছে সেটি তার স্বপ্নের চেয়েও বড়।
সমীক্ষা বলছে, দেশে প্রতি বছর প্রায় ৬ লাখ পোড়া রোগী হাসপাতালে ভর্তি হোন, যা যে কোন দেশের তুলনায় বেশি। সে অনুযায়ী এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রয়োজন ৪ হাজার। কিন্তু বর্তমানে বার্ন ইনস্টিটিউটে আছেন মাত্র ৮২ জন। ভবিষ্যতে এই প্রতিষ্ঠান থেকেই দক্ষ চিকিৎসক বেরিয়ে আসবে বলে আশাবাদী ডা. সামন্ত।
প্রায় দেড় একর জমির উপর নির্মিতব্য ১৭তলা ইন্সটিটিউটে চলবে একাডেমিক কার্যক্রমও। বিদেশি শিক্ষার্থীরাও পড়াশোনার সুযোগ পাবে এখানে। আগামী বছরের মধ্যেই কাজ শেষ করতে কাজ চলছে জোরশোরে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যলয়ের পরিচালক ডা. জুলফিকার আলী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছায় এই বিশেষায়িত অত্যাধুনিক হাসপাতালটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে স্বাস্থ্যখাতে দেশ অনেকটা অগ্রসর হবে।
নির্মাণ কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর। প্রকল্প পরিচালক কর্নেল শাকিল বলেন, গত ৫ মাসে অর্ধেক বেশি কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই পুরো কাজ শেষ হবে।
/কিউএস
Leave a reply