শোক দিবস উপলক্ষে ছাত্রলীগের ব্যানারে আয়োজিত প্রোগ্রাম নিয়ে এবার বিতর্ক উঠেছে সর্বমহলে। কোন শোকসভা বা আলোচনা সভা নয় শোক দিবস উপলক্ষে করা পবিত্র কোরআন খতম, হামদ-নাত পরিবেশনা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন নিয়ে।
এতে রীতি অনুযায়ী ব্যবহার করা হয়নি বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্ট নিহতদের ছবি। ছাত্রলীগের পোস্টারে ব্যবহৃত রং ও ডিজাইনের বাইরে গিয়ে তৈরি এই পোস্টারটি নিয়ে তাই তৈরী হয়েছে বিতর্ক। প্রশ্ন উঠেছে আসলেই কী এটি ছাত্রলীগের পোস্টার?
বক্তা আর শিল্পী তালিকা চূড়ান্ত করে সাঁটানো হয়েছিল পোস্টার। এত বড় আয়োজন, অথচ এ বিষয়ে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বের চূড়ান্ত অনুমোদন ছিল না। প্রথাবিরোধী পোস্টার আর বিতর্কিত শিল্পীদের নিয়ে এমন আয়োজন নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে ছাত্রলীগে শীর্ষ নেতৃত্বের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে।
শোক দিবসের আয়োজনকে সামনে রেখে ছাত্রলীগের নামে ছাপানো এই পোস্টারটি নিয়ে চলছে সমালোচনা।
১৫ আগস্ট জাতীয় শোকদিবসে আলোচনার আয়োজন না করে বিতর্কিত ব্যক্তিদের নিয়ে হামদ-নাত ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করছে? সব মিলিয়ে ক্ষুব্ধ ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মীরা। অবশ্য বেকায়দা দেখে সোমবার সন্ধ্যায় একটি প্রেস রিলিজ ছাত্রলীগ জানায়, এর সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা নাই। কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়, সবার চোখের আড়ালে এতগুলো পোস্টার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে দেয়ালে সাঁটানো সম্ভব?
ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, আমরা বলেছি যে একটা প্রোগ্রাম করবো কিন্তু সেটা নিয়ে যে তারা পোস্টার ছাপিয়ে ফেলবে এটা আমাদের কনসার্নে ছিলনা।
ছাত্রলীগ সেক্রেটারী গোলাম রাব্বানী বলেন, ছাত্রলীগ কিভাবে কাওমী মাদ্রাসার ছাত্রদের সাথে কাজ করতে পারে সেটা নিয়ে একটা আলোচনা হয়েছিল কিন্তু সেখান থেকে একেবারে প্রোগ্রাম সেট করে পোস্টার ছাপানো কাম্য ছিলনা।
নেপথ্যের কারণ খুঁজতে পোস্টারে দেয়া নম্বরে ফোন করে পাওয়া যায় ডিজাইনার ও প্রেসের ঠিকানা। ফকিরাপুলের এই প্রেস থেকেই দুই হাজার কপি পোস্টার ছাপানো হয়।
পোস্টারের ডিজাইনার মহরত বলেন, মাহমুদ হাসান নামে একজন আমাকে বলেছিল একটা ডিজাইন করে দেয়ার জন্য তো আমি সেই ডিজাইনটা করে দিয়েছি।
বিতর্কিত এই আয়োজনের আহ্বায়ক ছিলেন যাত্রাবাড়ির একটি কাওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থী মাহমুদ হাসান। কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের নিয়ে শোক দিবসের একটি অনুষ্ঠান করার ব্যাপার ছাত্রলীগের সভাপতির সঙ্গে দেখা করেন মাহমুদ।
মাহফিল আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান বলেন, শোক দিবসের একটা আয়োজন করার ব্যাপারে সভাপতির সাথে (রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন) কথা হয়েছে এখানে সভাপতি কে থাকবে সঞ্চালক কে থাকবে এ নিয়ে কথা হয়েছে কিন্তু শিল্পী ঠিক করার দায়িত্ব আমার ছিলনা।
এদিকে মাহমুদের সাথে আলাপের কথা স্বীকারও করেন ছাত্রলীগ সভাপতি। জানান, চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছাড়াই পোস্টার ছাপিয়েছে আয়োজক কমিটি।
এবিষয়ে সংগঠনের সাবেক নেতারা বলছেন, সাম্প্রতিক ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশের যে আশঙ্কা করা হচ্ছে তার ফলাফলই এই পোস্টার কান্ড!
Leave a reply