জাবি প্রতিনিধি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রক্টরিয়াল টিমের সামনেই ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে মোট ছয়জন আহত হয়েছেন। মারধরের বিচার না হলে আমীকাল ভর্তি পরীক্ষা বন্ধ করে দেয়ার হুমকী দিয়েছে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই ও কম্পিউটার সায়েন্স ভবনের সামনে মারামারির এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে গুরুতর আহত সাব্বির হোসেন নাহিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণী (৪৪ তম ব্যাচ) ও শহীদ রফিক-জব্বার হলের আবাসিক
শিক্ষার্থী। অভিযুক্তরা হলেন আফনান হোসেন আপন (অর্থনীতি, ৪১ ব্যাচ),
নাজিমুল বরণ (অর্থনীতি, ৪২ ব্যাচ), জাকির (দর্শন, ৪৬ ব্যাচ), নাজমুল (দর্শন, ৪৫ ব্যাচ), জাহিদ (প্রাণিবিদ্যা, ৪৭ ব্যাচ)।
অভিযুক্তরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় ভূক্তভোগীরা বিচার দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছে।
অভিযোগপত্রে তারা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দুপুর দুইটায় এক ভর্তিচ্ছু নিয়ে পরীক্ষকেন্দ্রে পৌছে দিতে সিএসই ভবনের সামনে যায় সাব্বির। সাব্বির পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে গেলে অভিযুক্তরা তাদের দোকানে টাকার বিনিময়ে মোবাইল ও ব্যাগ রাখার জন্য বলে। এতে প্রতিবাদ করলে অভিযুক্তদের সাথে সাব্বিরের তর্ক হয়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তাদের সাথে সাব্বিরের সাথে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এসময় অভিযুক্ত জাকির অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও চড় থাপ্পড় দেয়। এসময় অভিযুক্ত জাহিদ মদের বোতল দিয়ে আঘাত করলে সাব্বিরের মাথা ফেটে যায়।
শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফনান হোসেন আপন ও নাজিমুল বরণের নেতৃত্বে এ মারামারি হয়েছে বলে তারা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন। এ ঘটনায় প্রক্টরিয়াল টিমের দুই সদস্যের সামনেই উভয় হলের শিক্ষার্থীরা মারামারিতে জড়িয়ে যায়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
আহত সাব্বিরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সাভারের একটি
বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অভিষেক মন্ডল বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে গিয়ে ছাত্রলীগের কর্মী আহত হয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বিচার চেয়েছি। আজকের মধ্যে বিচার না পেলে আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা বন্ধ করে দেয়া হবে।’
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফনান হোসেন আপন বলেন, ‘শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির কথায় আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। আমি কোনোভাবে মারধরের সাথে জড়িন নই।’
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের
শৃঙ্খলা কমিটির দৃষ্টিতে ছাত্রলীগের কেউ অভিযুক্ত হলে তাদেরকে কোনো ছাড় দেয়া
হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পাশাপাশি ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেও তাদের বিরুদ্ধে
ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন এ ধরণের
অনাকাঙ্খিত ঘটনা কাম্য নয়। মারামারির এ ঘটনার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা
কমিটির সভায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
Leave a reply