চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত: বিচারক সংকটে মামলার স্তূপ

|

চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার সংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি বিচারিক আদালত। তাই অতিরিক্ত মামলার চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন বিচারকরা। চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটসহ আওতাধীন আরও সাতটি আদালতে ঝুলছে প্রায় ৩০ হাজার মামলা। তার ওপর সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারকদের দিয়ে তিনটি দ্রুত বিচার আদালত এবং একটি ‘পিওর ফুড কোর্ট’ পরিচালনা করা হচ্ছে। এর মধ্যে দুটি আদালত বিচারকশূন্য। এছাড়া প্রতিদিনই আসছে নতুন নতুন মামলা। আদালতে বিচারক ও বিচারিক আদালত সংকটের কারণে বাড়ছে মামলার স্তূপ। মামলা বেশি থাকায় নিষ্পত্তিতে লেগে যাচ্ছে দীর্ঘ সময়। এ কারণে হয়রানি বাড়ছে বিচারপ্রার্থীদের। এমন অবস্থায় চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদলতে আরও তিনটি অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, ছয়টি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতসহ সহায়ক কর্মচারীর নতুন পদ সৃষ্টির আবেদন জানানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতরে।

একজন চিফ মেট্রোপলিট ম্যাজিস্ট্রেট ও তিনজন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে ১৯৭৯ সালে নগরীর ৬ থানা এলাকা নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেসি কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে নগরীতে থানা বেড়ে ১৬টি হয়েছে। ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর বিচার বিভাগ পৃথককালে একজন চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, একজন অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও পাঁচজন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে আদালতের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সেসময় বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার ১০৬টি। ২০০৮ সালে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের পদ আরও একটি বৃদ্ধি করে ৬টিতে উন্নীত করা হয়। এরপর ১০ বছরেও এখানে আদালতের সংখ্যা বাড়েনি। বর্তমানে একজন চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, একজন অ্যাডিশনাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও ছয়জন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ৬টি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মধ্যে বিচারক আছেন মাত্র চারজন। এর মধ্যে একটি আদালত দীর্ঘদিন ধরে বিচারকশূন্য এবং অপর একটি আদালতের বিচারক সম্প্রতি ছুটিতে গেছেন। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-১, ২ ও ৩-এর বিচারক অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে তিনটি দ্রুত বিচার আদালতে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এর বাইরেও পিওর ফুড কোর্টের অতিরিক্ত দায়িত্বও পালন করছেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটরা।

সূত্র জানায়, তিনটি অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও ছয়টি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বৃদ্ধিসহ সহায়ক কর্মচারীর নতুন পদ সৃষ্টির জন্য মহানগর দায়রা জজের মাধ্যমে আইন ও বিচার বিভাগীয় সচিবের কাছে আবেদন জানিয়েছেন চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ওসমান গনি।

চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মুরাদ হোসেন বলেন, ‘বর্তমানে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটসহ আওতাধীন আদালতগুলোয় ৩০ হাজার মামলা বিচারাধীন আছে। প্রতিটি আদালতে গড়ে ৩ হাজার ৭০০টি করে মামলা রয়েছে।’

চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসান বলেন, ‘চট্টগ্রাম মহানগর এলাকার ১৬টি থানা এলাকার জন্য ১৬ জন ম্যাজিস্ট্রেট প্রয়োজন। কিন্তু ১৬ জনের স্থানে বর্তমানে ৮ জন ম্যাজিস্ট্রেটও নেই। যেকটি আদালত আছে, এর মধ্যে একটি আদালত বিচারকশূন্য অপর একটি আদালতের বিচারক আছেন ছুটিতে।’


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply