ফিরে দেখা ২০১৯: ভয়ংকর হামলা নিউজিল্যান্ড-শ্রীলংকায়

|

বিশ্বজুড়ে বাড়ছে সন্ত্রাস, উগ্রবাদ ও কট্টরপন্থা। তার প্রত্যক্ষ সাক্ষী হয়ে বিদায় নিল ঘটনাবহুল ২০১৯ সাল। বিগত বছরগুলোর মতো এ বছরটিতেও পারস্পরিক বিপরীতমুখী অবস্থানে দাঁড়িয়ে হামলা ও পাল্টা হামলার রক্তাক্ত খেলায় মেতে ওঠে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলো। কখনও শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদী ও উগ্র কট্টরপন্থী।

আবার কখনও ইসলামের নামে আইএস, আল-শাবাব ও আল-কায়দা। সন্ত্রাসী হামলা যেমন হয়েছে, তেমনি সন্ত্রাসবাদ নির্মূলের নামেও অনেক হামলা হয়েছে। ঝরেছে সামরিক-বেসামরিক অগণিত মানুষের প্রাণ। এসব হামলায় ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে ভুক্তভোগীদের পাশে দাঁড়ানোর বিরল নজিরও দেখিয়েছে মানুষ।

উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হামলার কথা তুলে ধরা হল।

১৫ মার্চ, ২০১৯। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরে জুমার নামাজের সময় পরপর দুটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলা হয়। প্রথমে খুতবা চলাকালে আল নুর মসজিদে। সেমি অটোমেটিক রাইফেল নিয়ে সোজা মসজিদের ভেতরে ঢুকে যায় ঠাণ্ডা মাথার সন্ত্রাসী শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী ব্রেন্টন ট্যারান্ট। এর কিছুক্ষণ পরই অনতিদূরে নামাজরত লিনউড মসজিদে।

সিনেমার স্টাইলে চালানো সেই হামলার পুরো ঘটনাই সে ফেসবুকে লাইভে সম্প্রচার করে। অতর্কিত ওই হামলায় নারী, পুরুষ ও শিশুসহ ৫১ জন মুসল্লি নিহত হন। নিহতদের মধ্যে পাঁচজন বাংলাদেশিও ছিলেন। ভুক্তভোগী মুসলিম পরিবারগুলোর সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে শোক জানান দেশটির সর্বস্তরের নাগরিক।

রাষ্ট্রীয়ভাবেও পালিত হয় এই শোক। ভুক্তভোগী পরিবারের পাশে দাঁড়ান ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে কড়া মনোভাব দেখিয়ে প্রশংসা কুড়ান নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন।

ঘটনার সপ্তাহখানেক পর অস্ত্র আইনে পরিবর্তন আনারও ঘোষণা দেন তিনি। ২১ এপ্রিল ছিল খ্রিস্টানদের অন্যতম বড় উৎসব ইস্টার সানডে। উদযাপনের সময় শ্রীলংকার বাণিজ্যিক রাজধানী কলম্বোসহ কয়েকটি শহরের তিনটি গির্জা, চারটি হোটেল ও একটি চিড়িয়াখানায় সিরিজ বোমা হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা।

ভয়াবহ ওই হামলায় নিহত হন আড়াইশ’র বেশি মানুষ। এছাড়া চার শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। নিহতদের মধ্যে বিভিন্ন দেশের নাগরিক রয়েছেন। ভয়াবহ এ হামলার তিন দিন পরেই হামলাকারীদের ছবি প্রকাশ করে এর সম্পূর্ণ দায় স্বীকার করে জঙ্গি সংগঠন আইএস। ২০০৯ সালে গৃহযুদ্ধের অবসানের পর এটি শ্রীলংকায় সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হামলা।

১৪ ফেব্রুয়ারি জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় ভারতীয় সেনাদের গাড়ি বহরে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এতে নিহত হন ৪৪ জন ভারতীয় জওয়ান।

৩ মে আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বর্নো প্রদেশের ম্যাগুমারি শহরে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা চালায় আইএস।

এতে প্রাণ হারান ১০ জন সেনাসদস্য। ৪ মে লিবিয়ার সাবাহ শহরে একটি সেনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। ওই হামলায় নিহত হন ৯ জন সেনাসদস্য।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply