গাইবান্ধা প্রতিনিধি :
অবশেষে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের বিতর্কিত সেই পিআইও নুরুন্নবী সরকারের বদলি স্থগিতে হাইকোর্টের দেয়া স্থগিতাদেশ বাতিল করেছেন সুপ্রিম কোটের আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। একই সঙ্গে অধিদপ্তরের দেয়া বদলি আদেশ বহালের নির্দেশ কার্যকরের আদেশও দেয় আদালত। স্থগিতাদেশ বাতিলের ফলে শেষ পর্যন্ত সুন্দরগঞ্জ ছেড়ে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপেই যোগদান করতে হচ্ছে নুরুন্নবী সরকারকে।
আজ রোববার বিকেলে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে করা দুটি আপিল আবেদনের শুনানিতে এই আদেশ দেন আপিল বিভাগের নিয়মিত চেম্বার জজ আদালতের বিচারপতি।
এরআগে, বদলি স্থগিতাদেশ বাতিল চেয়ে পিআইও নুরুন্নবী সরকারের বিরুদ্ধে করা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর এবং স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির পক্ষে দুটি আবেদনের একসঙ্গে শুনানির আজ ধার্য দিন ছিলো। চেম্বার জজ আদালতে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহাবুবে আলম নিজেই রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে এ শুনানি করেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে উপস্থিত সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সোহান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘পিআইও নুরুন্নবী সরকারের হাইকোর্টের রিট পিটিশন আদেশে বদলি স্থগিতের বিরুদ্ধে দুইটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চেম্বার জজ আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে স্থগিতাদেশ বাতিল করে এবং অধিদপ্তরের দেয়া বদলির আদেশ কার্যকরের আদেশ দেন বিচারপতি। এই স্থগিতাদেশ বাতিলের ফলে আগের বদলি নির্দেশনাই বহাল থাকবে’।
এদিকে, হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ বাতিল ও অধিদপ্তরের বদলির আদেশ অনুযায়ী নুরুন্নব্বী সরকারকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা ছেড়ে নতুন কর্মস্থলে যেতে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সুন্দরগঞ্জের মানুষ। তবে দুর্নীতিবাজ পিআইও’র বিরুদ্ধে দ্রুত বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কার্যকরের দাবি তাদের।
গত ৩ ডিসেম্বর উচ্চ আদালতে রিট পিটিশনে (নং ১৩০৫৭) হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও একেএম কামরুল কাদের নুরুন্নবী সরকারের বদলিতে স্থগিতাদেশ দেয়। একই সঙ্গে অধিদপ্তরের সচিব ও বদলি আদেশ প্রদানকারীসহ ৭ জনকে বদলির কারণ জানতে চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে বলে। ওই আদেশে গত ৮ ডিসেম্বর সুন্দরগঞ্জে অফিস দখল করেন নুরুন্নবী। গত ২৮ সেপ্টেম্বর নুরুন্নবী সরকারকে বদলির আদেশ দেয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। কিন্তু নতুন কর্মস্থল সন্দ্বীপে যোগদান না করায় তিনি স্ট্যান্ড রিলিজ হন। এরপর অসুস্থ অজুহাতে প্রায় দুই মাস ছুটিতে ছিলেন নুরুন্নবী সরকার।
২০১৫ সালে যোগদানের পর টানা ৫ বছর সুন্দরগঞ্জে দুর্নীতির রাজত্ব কায়েমে নুরুন্নবীর বিরুদ্ধে দুনীতি ও লুটপাট এবং ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে একাধিক মামলা হয়। তার দুর্নীতি কর্মকাণ্ড নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রচার হয় যমুনা টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে।
দুর্নীতির খবর প্রকাশে গত ১৬ অক্টোবর মানহানির অভিযোগে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের ১২ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেন নুরুন্নবী সরকার।
এছাড়া অধিদপ্তরের আদেশ অমান্যর পরেও উল্টো বদলির কারণ জানতে অধিদপ্তরের সচিব, মহাপরিচালক ও গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকসহ ৭ জনকে উকিল নোটিশ পাঠায় নুরুন্নবী।
Leave a reply