তিন আমেরিকার নৌসেনাকে গুলি করে হত্যার ঘটনার জেরে এবার ২১ সৌদি সামরিক কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের সৌদি আরবে ফেরত পাঠানো হবে। তদন্তে সন্ত্রাসবাদের প্রমাণ পাওয়ায় সোমবার মার্কিন বিচার বিভাগ এমন ঘোষণা দিয়েছে। তাদের তদন্তে বহিষ্কৃত এ সকল কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শিশু পর্নোগ্রাফি ও যুক্তরাষ্ট্র বিদ্বেষ ও জিহাদী মনোভাবের প্রমাণ মিলেছে। খবর আল জাজিরার।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল বিল বার বলেন, গত ৬ ডিসেম্বরের ওই এলোপাতাড়ি গুলি সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রম। ফ্লোরিডায় পেনসাকোলায় সৌদি বিমান বাহিনীর সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট মোহাম্মদ সাঈদ আল-শামরানি এই হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিলেন।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সাক্ষ্যপ্রমাণে দেখা গেছে— বন্দুকধারী জিহাদি মতাদর্শে প্ররোচিত হয়েছিলেন। তবে তিনি অন্যান্যদের সঙ্গে আঁতাত করেছেন বলে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তার দুটি আইফোন আনলক করা সম্ভব হয়নি। কাজেই আল-শামরানি কাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এতে তাও জানা সম্ভব হয়নি।
বার বলেন, বন্দুকধারীর আইফোন আনলক করতে আমরা অ্যাপলের সহায়তা চেয়েছি। কিন্তু তারা আমাদের বাস্তবিক কোনো সহায়তা করেনি।
জিহাদি উপদান ও শিশু পর্নোগ্রাফির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় ঘাঁটির ফ্লাইট স্কুল থেকে আল-শামরানির ২১ সহকর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানালেন মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল। বলেন, এসব বিষয় ফৌজদারি বিচারের পর্যায়ে না পৌঁছালেও রিয়াদ দৃঢ়ভাবে জানিয়েছে যে সৌদি বিমান ও নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তার সঙ্গে এসব কার্যক্রম বেমানান। কাজেই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম থেকে এই ২১ ক্যাডেটকে বাদ দেয়া হয়েছে।
সোমবার তাদের সৌদি আরবে ফেরত পাঠানো হবে বলেও জানালেন তিনি। বিল বার বলেন, সামরিক অপরাধ ও বিচার নীতিমালা অনুসারে প্রতিটি ঘটনাই পর্যালোচনা করা হবে। সৌদি আমাদের নিশ্চিত করেছে যে ফেরত পাঠানো কারো বিরুদ্ধে যদি পরবর্তী সময়ে অভিযোগ গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়ে দেয়া হবে।
গেলো বছরের ৬ ডিসেম্বর তিন মার্কিন নাগরিককে গুলি করে হত্যা ও আটজনকে আহত করেছেন আল-শামরানি নামে এক সৌদি সেনা। পরে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি। এটিকে পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে আখ্যায়িত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তদন্তে বেরিয়ে আসে, ২০১৯ সালে ১১ সেপ্টেম্বর সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে তিনি বলেছেন, ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইলবিরোধী বিভিন্ন বিষয়ও পোস্ট করেছেন তিনি।
এ ঘটনায় সৌদি-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ এক দশকের এই সামরিক প্রশিক্ষণ এখন হুমকিতে পড়েছে। সৌদি আরবে কোটি কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রির সঙ্গে এই প্রশিক্ষণ সম্পর্কিত। যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ হাজারের মতো বিদেশি সামরিক সদস্যদের সঙ্গে সেখানে সাড়ে আটশ সৌদি রয়েছেন। মূলতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনা সামরিক বিমান রক্ষণাবেক্ষণের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছিল তাদের।
Leave a reply