এমনিতে শিল্প কারখানার দূষণের কবলে পড়ে চোখ ধাঁধানো ধবধবে সাদা মিনার ও গম্বুজগুলো হয়ে গেছে হলদেটে; ভরা পূর্ণিমায় আগের মতো দ্যুতি ছড়ায় না মর্মর পাথরের তৈরি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্থাপত্য শৈলী তাজমহল। উপরন্তু যমুনা নদীর গতি-প্রকৃতি পরিবর্তনে এর ভিত্তিও দূর্বল হতে শুরু করেছে।
ভারত ভ্রমণের মূল আর্কষণের তালিকায় তাজমহল সন্দেহাতীতভাবে সবার উপরে থাকায় দেশি-বিদেশি পর্যটকের আগমন দিন দিন বেড়েই চলেছে। সদ্য বিদায়ী বছরে অনিন্দ্য সুন্দর এ স্থাপত্য দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন ৬৫ লাখ পর্যটক। প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষ আসেন তাজমহল দেখতে; বিশেষ বিশেষ দিনে এই সংখ্যা বেড়ে ৭০ হাজারে দাঁড়ায়।
পর্যটকদের এ ঢল সামলানো কর্তৃপক্ষের সামনে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে ঢল সামলাতে সামলাতে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার মতো দৈনন্দিন রক্ষণাবেক্ষণের কাজও পুরোপুরি করা যাচ্ছে না। ভ্রমণকারীদের ঢল বাঁচিয়ে তাজমহলকে রক্ষায় ভারতীয় কর্তৃপক্ষ প্রবেশাধিকার সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন থেকে তাজমহলে দৈনিক ৪০ হাজারের বেশি পর্যটক প্রবেশ করতে পারবে না।
কিন্তু বিদেশি পর্যটকদের ক্ষেত্রে সংখ্যার সীমাবদ্ধতা থাকছে না। এই দ্বৈত নীতির পেছনে অবশ্য নগদ নারায়ণের বিষয়টিই মুখ্য। কেননা, ভারতীয়দের জন্য প্রবেশ মূল্য মাত্র ৪০ রুপি হলেও বিদেশি পর্যটকদের জনপ্রতি গুণতে হয় হাজার রুপি।
এরপরও রুপি খরচ করতে হবে, যদি কেউ রাজা-রাণিকে দেখতে চায়। হোক না মৃত, তাদের কবর দেখতেও পর্যটকদের বাড়তি কড়ি ফেলতে হবে।
মুঘল সম্রাট শাহজাহান তাঁর স্ত্রী মমতাজ মহলের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এই স্থাপনাটি নির্মাণ করেন। মুঘল দরবারের স্থপতি আহমদ লাহোরীর তত্ত্বাবধানে সুদীর্ঘ বিশ বছর ধরে পৃথিবীর অন্যতম অত্যাচার্য এ স্থাপত্য শিল্পটি নির্মিত হয়।
যমুনা অনলাইন: এনপি/এফএইচ
Leave a reply