করোনাভাইরাসের ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় নজির স্থাপন করছে দ্বীপরাষ্ট্র আইসল্যান্ড। মহামারী প্রতিরোধে পুরো বিশ্ব লকডাউন হলেও এই পথে যায়নি দেশটি। সংক্রমণ আটকাতে প্রায় চার লাখ নাগরিকের সবাইকেই পরীক্ষার আওতায় নিয়ে এসেছে।
লক্ষণযুক্ত ও লক্ষবিহীন কোনো বাছবিচার নেই। কাজটি বেশ জোরেশোরেই চালিয়ে যাচ্ছে তারা। সন্দেহজনক এলাকার সবাইকে টেস্ট করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরমার্শ অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলছে দেশটির সরকার ও প্রশাসন। কনট্যাক্ট ট্রেসিং বা ট্রেসার স্টাডি ও টেস্টকে প্রধান অস্ত্র করে অব্যাহতভাবে পরীক্ষা করে চলেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। এরই মধ্যে ভাইরাসটি ৩৮০ বারেরও অধিকবার জিনের বদল ঘটিয়ে আরও শক্তিশালী হয়েছে। একে কিভাবে রুখতে হবে সেটা খুঁজতেই গলদঘর্ম বিশ্বের তাবৎ বাঘা বাঘা বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকরা।
দেশটিতে রোববার থেকে বুধবার পর্যন্ত ১৭ হাজার ৯০০ নাগরিকের পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে যা দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫ শতাংশ। পরীক্ষা করছে দেশটির ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতাল। এর বাইরে দেশটির প্রায় অর্ধেক জনগণের করোনা পরীক্ষা করবে বায়োফার্মা কোম্পানি ডিকোড জেনেটিক্স। যেসব নাগরিকের মধ্যে করোনার লক্ষণ প্রকাশ পায়নি কিংবা যারা কোয়ারেন্টিনে নেই তাদের সবাইকে পরীক্ষা করছে ডিকোড জেনেটিকস।
ডিকোড ইতোমধ্যে ৯ হাজারের বেশি মানুষের পরীক্ষা করেছে। এর মধ্যে ১ শতাংশেরও কম মানুষের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। আর আক্রান্তদের মধ্যে ৫০ শতাংশের মধ্যেই করোনার কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায়নি। ডিকোড কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা কেরি স্টেফানসন মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, আক্রান্তদের মধ্যে যেসব রোগীর লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে না কিংবা কম প্রকাশ পাচ্ছে তাদের মাধ্যমেই এটি বেশি ছড়াচ্ছে। স্টেফানসন বলেন, ‘আমরা যেহেতু সাধারণ মানুষকে পরীক্ষা করছি তাই এমন মানুষও পাচ্ছি যাদের কোনো লক্ষণ নেই কিন্তু করোনাভাইরাস বহন করছেন। অর্থাৎ তাদের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার আগে ধরা পড়ছে। পরিসংখ্যানবিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের তথ্য মতে, বুধবার পর্যন্ত দেশটিতে এক হাজার ১৩৫ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়েছে। এর মধ্যে মারা গেছেন দু’জন।
Leave a reply