করোনা পরিস্থিতিতে আগামী মাস থেকে দৈনিক মজুরির পাশাপাশি অতিরিক্ত ১৫০ টাকা ‘ঝুঁকিভাতা’ পাবেন পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে কাজ করা শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার আইন বিষয়ক কর্মকর্তা মো: মাজহারুল ইসলাম এই তথ্য জানান।
পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে শ্রমিক ও ঠিকাদারের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার পর শ্রমিকদের অতিরিক্ত মজুরি নির্ধারণ সংক্রান্ত বৈঠক হয়। এতে শ্রমিকদের ঝুঁকিভাতা দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়।
মো: মাজহারুল ইসলাম জানান, শ্রমিক আহতদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি করে দেয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটি রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর আইনগতভাবে বিষয়টির নিষ্পত্তি করা হবে। পদ্মাসেতু প্রকল্পে প্রায় ১৩০০ শ্রমিক এই করোনা মহামারিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তাই এই কর্মকালীন প্রত্যেক শ্রমিককে থাকা খাওয়া এবং প্রতিদিন ৩০০ টাকা করে দেওয়ার কথা ছিল। ৩০০ টাকা করে দিতে না পারার অপারগতা প্রকাশ করে দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে যতদিন করোনা মহামারি থাকবে ততদিন প্রত্যেক শ্রমিককে ১৫০ টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। উভয় পক্ষ এই সিদ্ধান্তে স্বাক্ষর করে সমস্যার সমাধান হয়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রজেক্ট ডিরেক্টর আবুল কালাম আজাদ, প্রজেক্ট ম্যানেজার মাসিউল আলম, পিডি গোলাম সারোয়ার, জেলা প্রশাসক মোঃ মনিরুজ্জামান তালুকদার, পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন, লৌহজং ও শ্রীনগর সার্কেল, লৌহজং ও শ্রীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান, লৌহজং থানার অফিসার আলমগীর হোসাইন এবং উপজেলা নির্বাহী কমিশনার (ভ’মি) মু. রাশেদুজ্জামান।
লৌহজং থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর হোসাইন জানান, বৈঠক শেষে চলতি মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত শ্রমিকদের আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩০০ টাকা ঝুঁকিভাতা দেবে কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী মাস থেকে যতদিন করোনা মহামারি চলবে ততদিন প্রত্যেককে ১৫০ টাকা করে ঝুঁকিভাতা প্রদান করার সিদ্ধান্ত হয়। রাতের ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুইজন আর্মি অফিসার ও একজন চীনা কোম্পানীর কর্মকর্তা। তাদের তদন্ত রিপোর্টের পরেই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য,পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্প সূত্র জানায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রতিশ্রুত বেতন ভাতা না দেওয়ায় বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শ্রমিকরা। করোনা পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরির পাশাপাশি অতিরিক্ত তিনশ টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে শ্রমিক নিয়োগ করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে তাদের দেওয়া হচ্ছিল দেড়শ টাকা করে। এ নিয়ে শ্রমিকরা শুরুতে প্রতিবাদ জানায়। তাতে কাজ না হলে পরে শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন।
বুধবার (৬ মে) রাতে পাওনা টাকার দাবিতে শ্রমিকরা প্রকল্প এলাকার ভেতরে বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা বেশ কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করেন। এসময় ঠিকাদারদের নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে আহত হন ৫ শ্রমিক। তাৎক্ষণিক আটক করা হয় ২০ শ্রমিককে।
Leave a reply