করোনা আক্রান্ত চিকিৎসককে না নিয়েই ফিরল এয়ার অ্যাম্বুলেন্স!

|

কেউ বলছেন পর্যাপ্ত সময় ছিল না, কারও দাবি এলাকাবাসীর বাধা আবার কেউ বলছেন করোনা আক্রান্ত জেনে অ্যাম্বুলেন্স কর্তৃপক্ষই নেয়নি রোগীকে। শেষ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত মুমূর্ষু এক চিকিৎসককে না নিয়েই ঢাকায় ফেরত গেছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। রোববার এমন ঘটনা ঘটেছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বইছে।

চট্টগ্রামের মা ও শিশু হাসপাতালের করোনা আক্রান্ত এক চিকিৎসককে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রোগীকে না নিয়েই ফেরত যায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি। একটি সূত্র দাবি করছে, করোনা রোগী জানার পরেই অ্যাম্বুলেন্সটি রোগী না নিয়েই চলে গেছে।

কিন্তু চিকিৎসক নেতারা বিষয়টি অস্বীকার করে বলছেন, নির্ধারিত সময়ে রোগী প্রস্তুত না থাকায় রোগী ছাড়াই অ্যাম্বুলেন্সটি ফিরে গেছে। এদিকে এলাকাবাসীর বাধার বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়নি বলে দাবি পুলিশের।

ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সদীপ কুমার দাশ বলেন, রোগী নেয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসার বিষয়টি আগে পুলিশকে অবহিত করা হয়নি। পরে খবর পেয়ে আমরা আগ্রাবাদের মা ও শিশু হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন রোগী প্রস্তুত ছিলো না বলে অ্যাম্বুলেন্স ফিরে গেছে। স্থানীয়দের বিরোধিতার বিষয়টি তারা আমাদেরকে জানাননি। আমাদেরকে জানানো হলে আমরা তাৎক্ষণিক ভাবে ব্যবস্থা নিতে পারতাম।

এ ব্যাপারে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার হিসাবে কর্মরত ছিলেন এই চিকিৎসক। এমনকি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সেখানেই তার চিকিৎসা চলছিলো।

চিকিৎসকদের সংগঠন বিএমএ চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী জানান, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. এস এম জাফর হোসাইন রুমী গত কয়েকদিন ধরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। রোববার বিকালের দিকে তার অক্সিজেন ঘাটতি দেখা দেয়। তাৎক্ষণিক ভাবে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হয়।

তিনি আরও জানান, এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ছিলো বিকাল ৫টা ১৫ মিনিটে রোগী নিয়েই ঢাকায় ফিরে যাবে। সে অনুযায়ী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আগ্রাবাদ বহুতল কলোনি এলাকায় এসে নামে। কিন্তু রোগী প্রস্তুত করতে অনেকটা দেরী হয়ে যায়। এর মধ্যে সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় রোগী না নিয়েই অ্যাম্বুলেন্সটি চলে যায়। তাদের বক্তব্য ছিলো অন্ধকার হয়ে গেলে অ্যাম্বুলেন্স ঢাকা পৌঁছাতে সমস্যা হবে। তাই তারা দেরি করতে রাজি হয়নি।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাতে বেশ কিছু ছবি ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ছবির আশ-পাশে কিছু মানুষও দেখা যাচ্ছে।

তাতে বলা হয়, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে রোগী নেয়া হলে আশপাশে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই স্থানীয় লোকজন রোগীকে আর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে উঠতে দেয়নি। আর স্থানীয়দের বাধার মুখে রোগী না নিয়েই অ্যাম্বুলেন্সটি ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছে। এ নিয়ে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বইছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply