‘আম্পান’ বাংলাদেশে জোয়ার পাবে নাকি ভাটা?

|

'আম্পান' বাংলাদেশে জোয়ার পাবে নাকি ভাটা?

'আম্পান' বাংলাদেশে জোয়ার পাবে নাকি ভাটা?

উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় কতটা ক্ষতি করবে সেটি অনেকখানি নির্ভর করছে জোয়ার ভাটার ওপর। কোনো শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় যদি জোয়ারের সময় আঘাত হানে তাহলে বড় ধরনের জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা থাকে। কেননা জোয়ারের সময় এমনিতেই সমুদ্রপৃষ্ঠের পানির উচ্চতার স্তর বৃদ্ধি পায়। আবহাওয়া বিষয়ক সাইট উইন্ডির হিসেব অনুযায়ী বুধবার বিকেলে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূল স্পর্শ করবে। সন্ধ্যা ৬টায় এর কেন্দ্র সুন্দরবন ঘেঁষে ভারতে প্রবেশ করবে। রাত ৮ টায় এর কেন্দ্রের বেশিরভাগ স্থলে ঢুকে পড়ার পূর্বভাস দেয়া হচ্ছে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সে সময়ে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে জোয়ার থাকবে না ভাটা? জোয়ার-ভাটার পূর্বাভাস দেওয়া ওয়েবসাইট টাইড ফোরকাস্টের হিসেব বলছে, বুধবার চট্টগ্রাম উপকূলে দিনের প্রথম জোয়ার বেলা ১১টি ৪০ মিনিটে এবং দ্বিতীয় জোয়ারটি আসবে রাত ১১টা ৫৪ মিনিটে। পক্ষান্তরে দিনের প্রথম ভাটা সকাল ৬.১৭ মিনিটে এবং দ্বিতীয় ভাটা সন্ধ্যা ৬.৪৭ মিনিটে।

বরগুনা উপকূলে দিনের প্রথম জোয়ার সকাল ৯.২৬ মিনিটে এবং দ্বিতীয় জোয়ারটি আসবে রাত ৯.৩২ মিনিটে। পক্ষান্তরে দিনের প্রথম ভাটা রাত ৩.০৯ মিনিটে এবং দ্বিতীয় ভাটা দুপুর ৩.৩৪ মিনিটে।

সন্দ্বীপে উপকূলে দিনের প্রথম জোয়ার বেলা ১২.১৪ মিনিটে এবং দ্বিতীয় জোয়ারটি আসবে রাত ১২.৪৩ মিনিটে। পক্ষান্তরে দিনের প্রথম ভাটা সকাল ৬.২৬ এবং দ্বিতীয় ভাটা সন্ধ্যা ৬.৫২ মিনিটে।

কক্সবাজার উপকূলে দিনের প্রথম জোয়ার সকাল ৮.৪৫ মিনিটে এবং দ্বিতীয় জোয়ারটি আসবে রাত ৮.৫২ মিনিটে। পক্ষান্তরে দিনের প্রথম ভাটা ২.২৯ মিনিটে এবং দ্বিতীয় ভাটা রাত ২.৫৪ মিনিটে।

সে হিসেবে বর্তমান গতিপথ মেনে প্রবেশ করলে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় জোয়ার পাবে না। তবে, আম্পান স্থলভাগে প্রবেশের কিছু পরই বরগুনা, সন্দ্বীপ উপকূলে জোয়ার আসবে। সেক্ষেত্রে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা এখানে বেশি।

মোংলা ও পায়রা বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৬ নম্বর সংকেতের আওতায় থাকবে।

ঘূর্ণিঝড় জনিত জলােচ্ছ্বাসের সতর্কতা:
ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভােলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নােয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১০-১৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’র কেন্দ্রের কাছে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার যা দমকা হাওয়ার সাথে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরইমধ্যে বাগেরহাট-ফেনী-ভোলাসহ বেশ কিছু এলাকায় ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হচ্ছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply