সংঘর্ষের কারণেই ৪২ শতাংশ লঞ্চ দুর্ঘটনা

|

নৌপরিবহন অধিদফতরের তথ্যমতে, দেশে সবচেয়ে বেশি লঞ্চ দুর্ঘটনা ঘটে সংঘর্ষের কারণে। শুধু এ কারণে নৌপথে দুর্ঘটনার হার ৪২ দশমিক ৭০ শতাংশ। চালকের অদক্ষতা, অসতর্কতা, বেপরোয়া মনোভাব ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে নৌযানের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। অন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলোর মধ্যে অতিরিক্ত যাত্রী বা মাল বোঝাই, বৈরী আবহাওয়া, অগ্নিকাণ্ড ও তলদেশ ফেটে যাওয়া অন্যতম।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ১৯৯১ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ২৯ বছরে ৫৭০টি দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ৬৫৪ জন মারা গেছেন। এসব ঘটনায় ৫১৬ জন আহত ও ৪৮৯ জন নিখোঁজ হন। এসব দুর্ঘটনার মধ্যে যাত্রীবাহী নৌযানের সংখ্যা ২৩৬টি। ২০১৯ সালে ২৬টি নৌদুর্ঘটনায় তিনজন মারা গেছেন। ৩৩ জন আহত ও ২০ জন নিখোঁজ হন। এর আগে ২০১৫ সালে ২২টি দুর্ঘটনায় ১২০ জন মারা যান। সর্বশেষ সোমবার বুড়িগঙ্গায় মর্নিং বার্ডডুবিতে ৩৪ জন মারা গেছেন।

নৌপরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক কমডোর সৈয়দ আরিফুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান ও ধরন অনুযায়ী শুধু সংঘর্ষে ৪২ দশমিক ৭০ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে। অতিরিক্ত যাত্রী বা মাল বোঝাইয়ের কারণে ২৪ দশমিক ৭০ শতাংশ, বৈরী আবহাওয়ার কারণে ২৩ দশমিক ৬০ শতাংশ, অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণে ৬ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং অন্যসব কারণে ২ দশমিক ৮৩ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, সংঘর্ষের বেশির ভাগ ঘটনার সঙ্গে মানুষ জড়িত।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আইনে কঠোর সাজার বিধান না থাকায় মালিক ও চালকরা বেপরোয়া আচরণ করেন। এছাড়া নৌযান দুর্ঘটনা তদন্ত, মামলা ও আদালতে সরকার পক্ষের জোরালো ভূমিকা না থাকায় অনেক ক্ষেত্রে দোষীরা দায়মুক্ত হোন।

অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল আইনের খসড়ায় চালক বা মালিকের গাফিলতিতে দুর্ঘটনায় জানমালের ক্ষতি হলে ১০ বছর সাজার প্রস্তাব করা হলেও সেটি থেকে সম্প্রতি সরে এসেছে নৌপরিবহন অধিদফতর। মালিক ও শ্রমিক নেতাদের চাপে ৫ বছর সাজার বিধান রেখে আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হচ্ছে।

জানা গেছে, দেশে নিবন্ধিত জাহাজের সংখ্যা ১২ হাজার ৯৫৯টি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply