সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোরস ডিপোর (সিএমএসডি) কর্মচারীদের অবহেলোয় নষ্ট হয়েছে এক হাজার ৬৯৫ সেট মূল্যবান পার্সোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই)।
বৃষ্টির পানিতে ভিজে এসব পিপিই একেবারেই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
যার আনুমানিক মূল্য সাড়ে ১৩ লাখ টাকার বেশি। এ ঘটনায় দায়ী করে দু’জন স্টোরকিপারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। তবে তারা সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেনি। তবে দুই কর্মচারীই এটিকে অনিচ্ছাকৃত ভুল উল্লেখ করে সিএমএসডি পরিচালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, এ বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন, যদি কোনো সরকারি কর্মচারী সরকারি সম্পত্তি ইচ্ছাকৃতভাবে নষ্ট করে থাকে, তবে জড়িতদের বিরুদ্ধে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। সম্পদের পরিমাণ যত স্বল্পই হোক না কেন।
সিএমএসডির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মো. মহিউদ্দিন বলেন, পরিচালক বর্তমানে অসুস্থ রয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি অবগত। এক্ষেত্রে যারা সংশ্লিষ্ট তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সিএমএসডির স্টোরকিপার/স্টোর সহকারী মো. গিয়াসউদ্দিন মোল্যাকে দেয়া কারণ দর্শানো নোটিশে বলা হয়, ৮ আগস্ট সন্ধ্যার পর সংবাদ পাওয়া গেছে স্টোরে সংরক্ষিত বেশকিছু পার্সোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (কভারঅল ও সু-ক্যাপ) বৃষ্টির পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। উপ-পরিচালক ও সহকারী পরিচালককে তাৎক্ষণিকভাবে স্টোরে পাঠলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।
পরবর্তীতে দেখা যায়, ১ হাজার ৬৯৫ সেট মূল্যবান পিপিই বৃষ্টির পানিতে ভিজে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে গেছে। সেখানে আর বলা হয়, স্টোর অফিসার হিসেবে এসব মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ মালামাল তত্ত্বাবধান ও দেখাশোনা করা আপনার অন্যতম দায়িত্ব। আপনি দায়িত্ব যথাযথ পালনে ব্যর্থ হয়েছেন, সরকারের মূল্যবান অর্থ নষ্ট হয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ জনস্বার্থের হানি ঘটেছে। যা কর্তব্যে চরম অবহেলার শামিল।
এরপর ২৩ আগস্ট তারিখে কারণ দর্শানোর জবাব দেন গিয়াস উদ্দিন মোল্যা। সেখানে তিনি বলেন, ওইদিন পুরোটা সময় আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় মুষলধারে বৃষ্টি হয়। রাত পৌনে ১১টার দিকে রিসিভিং ইনচার্জ এবং সহকারী পরিচালকের (এসএন্ডজি) ফোন পেয়ে দ্রুত স্টোরে যাই। রিসিভিং শাখার সামনে শেডের নিচে ৬০০ কার্টনের (প্রতি কার্টনে ৩০ পিস পিপিই) মধ্যে ১৬৯৫ পিপিই স্টোরের ভেতরে কর্তব্যরত আউটসোর্সিং রাজস্ব কর্মচারী, রিসিভিং শাখার ইনচার্জ ও সহকারীর সমন্বয়ে উক্ত মালামাল স্টোরে নেয়া হয়। বৃষ্টির পানিতে ভিজে যাওয়া ১৬৯৫ পিস পিপিই আলাদা করে রাখা হয়। যা ৯ আগস্ট ভোর ৪টায় সহকারী পরিচালককে (এসএন্ডডি) জানানো হয়।
একই বিষয়ে ১৯ আগস্ট সিএমএসডির সিনিয়র স্টোরকিপার মোহাম্মদ ইউসুফ ফকিরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। সেখানে বলা হয়, ‘ইন্টারন্যাশনাল নিটওয়্যার অ্যান্ড অ্যাপারেল লি. ইউনিট-২ এর সরবরাহ করা ১ লাখ ২৮ হাজার ৫৯০ সেট পার্সোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট যা ৮, ৯, ১৩ ও ১৫ জুলাই গ্রহণ করা হয়।
যা ২৯ জুলাই সার্ভে করা হয়। সার্ভে করার পরেও সংশ্লিষ্ট স্টোরকিপারকে বুঝিয়ে না দিয়ে ৮ আগস্ট পর্যন্ত নিজ দায়িত্বে রাখেন। যা ৮ আগস্ট সন্ধ্যার পর বৃষ্টির পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। এতে ১ হাজার ৬৯৫ সেট মূল্যবান পিপিই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেছে। সার্ভে করা মালামাল যথাসময়ে সংশ্লিষ্ট স্টোরে হস্তান্তর না করা এবং রক্ষণাবেক্ষণ না করায় সরকারের মূল্যবান অর্থ নষ্ট হয়েছে। যা কর্তব্যে চরম অবহেলার শামিল।
এরপর ২৩ আগস্ট এ চিঠির জবাবে দেন মোহাম্মদ ইউসুফ ফকির।
তিনি বলেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল নিটওয়্যার অ্যান্ড অ্যাপারেল লি. এবং ক্রমিক নং ১৭২ স্মার্ট জ্যাকেট লিপিবদ্ধ করে ক্লোথিং শাখায় ইনচার্জ মো. আল আমিনকে প্রদান করা হয়। কিন্তু একই রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ মেসার্স স্মার্ট জ্যাকেটের চালান ও মালামাল ৪ আগস্ট গ্রহণে করলেও ‘ইন্টারন্যাশনাল নিটওয়্যার অ্যান্ড অ্যাপারেল লি. ইউনিট-২ এর মালামাল গ্রহণে গড়িমসি করে।
সূত্র: যুগান্তর
Leave a reply