ভারতে তিন মাস ধরে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে লাগাতার বিক্ষোভ-আন্দোলনের মধ্যেই রাজধানী দিল্লির একটা অংশে শুরু হয় সহিংসতা। সেটাই অতি দ্রুত পরিণত হয় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায়। যাতে নিহতের সংখ্যা ৪০ ছাড়িয়ে যায়।
সাম্প্রদায়িক এই দাঙ্গায় ১৭ হাজার ৫০০ পাতার চার্জশিট দাখিল করে দিল্লি পুলিশ। দাঙ্গার বিশদ বিবরণী উল্লেখ করা হয় সেখানে। কিন্তু দিনশেষে ‘তালগাছ আমার’ এমন অবস্থা রাজ্যের প্রশাসনেই। আর সেই চার্জশিট নিয়েই শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। সরাসরি আঙুল উঠছে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ দিল্লি পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে। প্রশ্ন উঠেছে কতটা নিরপেক্ষ এই চার্জশিট?
ডয়চে ভেলের খবরে বলা হয়, আদালতে দিল্লি পুলিশ যে চার্জশিট পেশ করেছে তাতে কেবলমাত্র বিজেপি বিরোধী আন্দোলনের নেতাদের নামই প্রাধন্য পেয়েছে। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জওহরলাল নেহরু (জেএনইউ) বিশ্ববিদ্যালয় সর্বত্রই প্রতিবাদের আগুন জ্বলে উঠছে। ঘটনাচক্রে দিল্লি দাঙ্গায় দিল্লি পুলিশ যতজনের নাম চার্জশিটে রেখেছে তাদের অধিকাংশই নাগরিকত্ব আইন বিরোধী আন্দোলনের প্রথম সারির কর্মী।
খবরে আরও বলা হয়, জেএনইউয়ের ছাত্র নেতা থেকে শুরু করে সাসপেন্ড হওয়া নেতা সকলকেই অভিযুক্ত করেছে পুলিশ। অথচ বিজেপি বা গেরুয়া শিবিরের উল্লেখযোগ্য কারও নাম নেই সেখানে। কিন্তু বিজেপির কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে সে সময় সরাসরি অভিযোগ ওঠে।
আন্দোলনের সময়েই বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র পূর্ব দিল্লিতে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, সিএএ নিয়ে যারা জায়গায় জায়গায় আন্দোলন করছেন, তাদের এরপর তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। পুলিশ নয়, তারাই (বিজেপি) তুলে দেবেন বলে হুমকি দিয়েছিলেন কপিল।
এর ঠিক কিছুদিন আগেই বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর ‘গোলি মারো শালোকো স্লোগান’ দিয়েছিলেন প্রকাশ্যে।
সাবেক এক পুলিশ কর্মকর্তা পুলিশ কমিশনারকে দু’টি চিঠিতে উল্লেখ করেন, কী করে খপিল মিস্র, অনুরাগ ঠাকুর, প্রবেশ বর্মাকে ছাড় দেয়া হলো? কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলো না? রিবেইরো জানা যায় ওই পুলিশ কর্মকর্তা পদ্মভূষণ ও রাষ্ট্রপতির পুলিশ মেডেল পেয়েছেন। পুলিশ মহলে তিনি রীতিমতো শ্রদ্ধার পাত্র।
Leave a reply