মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি:
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। অতীতের চেয়ে এবার আলুর উৎপাদন অনেক বেশি হলেও ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে চাষিরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে উপজেলায় নয় হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়। এবার উৎপাদনে ফলন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় নয় হাজার ২০০ হেক্টর জমি।
আলু চাষিরা জানান, জমি থেকে আলু তুলতে শ্রমিকদের খরচ বহন করতে হিমশিম খেতে হয়। এছাড়া উপজেলার বাইরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় স্থানীয় মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে আলু বিক্রয় করতে হয়। ফলে কৃষকের চেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছেন মধ্যস্বত্বভোগী আলু ব্যবসায়ীরা।
উপজেলার জৈনসার ইউনিয়নের ভাটিম ভোগ গ্রামের আলু চাষি তোফাজ্জল মেম্বার জানান, আমি ২৩ একর জমিতে আলু চাষ করেছি। আলুর গাছ ভালো হয়েছে। আশা করছি ফলন ভালো তবে বাজারের যে অবস্থা আলুর দর নিয়ে চিন্তায় আছি।
উপজেলার পশ্চিমপাড়া গ্রামের আলু চাষি আব্দুল রাজ্জাক মোড়ল বলেন, আমি ১১ কানি জমিতে আলু চাষ করেছি। ভালো ফলনের আশা করছি। বর্তমান বাজার মূল্য মোতাবেক দর থাকলে খরচ উঠে কিছু লাভ হতে পারে, না হলে লোকসান হবে।
আলু চাষি শাহদাৎ হাওলাদার বলেন, আমি ৩৪ বিঘাতে আলু চাষ করেছি ভালো ফলন হয়েছে। গত সপ্তাহে ৬২ কেজির বস্তা বিক্রি করেছি ৮৪ টাকা। বর্তমানে সেই আলুর ৮৮ কেজি বস্তা ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ ব্যবধানে কেজি প্রতি দাম কমেছে ৪ টাকা। এভাবে দর কমতে থাকলে ভালো ফলন হয়েও খরচের টাকা উঠবে না বলে জানিয়েছেন উপজেলার জৈনসার ভাটিম ভোগ গ্রামের আলু চাষি
হাজী মো. ওয়াছেক মেম্বার।
উপজেলা দানিয়াপাড়া গ্রামের মধ্যস্বত্বভোগী আলু ব্যবসায়ী মো. জুয়েল হাওলাদার বলেন, আমরা কৃষকের জমি থেকে কম দামে আলু কিনে ভ্যানে করে নদীতে নিয়ে ধুয়ে বস্তায় ভরি, তারপর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করি। এখানে শ্রমিকদের খরচ দিয়েও মোটামুটি ভালোই লাভ হয়।
সিরাজদিখান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্যাণ কুমার সরকার জানান, এবার সিরাজদিখানে আবহাওয়া অনুকূলে থাকা ও শৈত্য প্রবাহ কম হওয়ায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়াও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কৃষকদের কাছে গিয়ে আলুর ফলন বৃদ্ধি করতে পরামর্শ দিয়ে গেছেন। আগামীতেও
আলুর বেশি উৎপাদনের জন্য কৃষকদের নিয়ে উঠান বৈঠকসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হবে।
ইউএইচ/
Leave a reply