চট্টগ্রামে বহুল আলোচিত মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকাণ্ডে তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার বাদী থেকে প্রধান আসামি হচ্ছেন। পিবিআইয়ের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানায়, বাবুল আক্তারকে আজ বুধবার মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হবে এবং মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। তিনি ওই হত্যা মামলার বাদী। আবার তদন্তে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তাই তার বিরুদ্ধে নতুন একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হবে বলে আদালতকে জানানো হবে। মামলাটি করা হবে পাঁচলাইশ থানায়। আগের মামলাটিও একই থানায় করা হয়েছে। মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন আজই মামলাটি দায়ের করবেন।
পাঁচ বছর আগে চট্টগ্রামে মাহমুদা খানম (মিতু) হত্যার ঘটনা ঘটে। এ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত সোমবার (১০ মে) বাবুল আক্তারকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে নেওয়া হয়েছে।
এর আগে, গতকাল পিবিআইয়ের ঢাকা অফিসে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনকে ডেকে নিয়ে কথা বলেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা। হত্যার ঘটনার পর প্রথমে জামাতাকে নির্দোষ দাবি করলেও পরবর্তীতে মোশাররফ হোসেন মেয়ে হত্যার জন্য বাবুল আক্তারকে দায়ী করে আসছিলেন।
২০১৬ সালের ৫ জুন ভোরে চট্টগ্রাম শহরের জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মাহমুদা খানম মিতুকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই সময় তার স্বামী তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। চট্টগ্রামে ফিরে তিনি পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
মামলায় তিনি দাবি করেন, জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের তিনি জড়িত থাকায় তার স্ত্রী আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হয়ে থাকতে পারেন। তবে সপ্তাহ দুয়েকের মাথায় তদন্তে নাটকীয় মোড় আসে। সন্দেহের তালিকায় উঠে আসে বাবুল আক্তারের নামও। পরে তাকে চাকরি থেকে অবসর নিতে হয়। মিতু হত্যার পর বাবুল আক্তার প্রথমে ঢাকার মেরাদিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে উঠেছিলেন। প্রথমে তাকে নির্দোষ বলে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিলেও পরে বাবুল আক্তারের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন ও শাশুড়ি সাহেদা মোশাররফ হত্যাকাণ্ডের জন্য মেয়ের জামাইকে দায়ী করা শুরু করেন।
শুরু থেকে চট্টগ্রামের ডিবি পুলিশ মামলাটির তদন্ত করে। তারা প্রায় তিন বছর তদন্ত করেও অভিযোগপত্র দিতে ব্যর্থ হয়। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালত মামলাটির তদন্তের ভার দেয় পিবিআইকে।
Leave a reply