স্বামী ও সন্তানের প্রতীক্ষায় দিন গুনছেন অসহায় স্ত্রী ও মা

|

আট দিন ধরে নিখোঁজ ইসলামি বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান। ৮ জুলাই রংপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন আবু ত্ব-হা। সঙ্গে ছিলেন দুই সহযোগী আব্দুল মুহিত ও মোহাম্মদ ফিরোজ এবং গাড়ি চালক আমির হোসেন ফয়েজ। এরপর থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন তারা। আবু ত্ব-হার সন্ধান পেতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ধর্না দিচ্ছেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী মাদ্রাসাশিক্ষক সাবিকুন্নাহার সারা। আমির হোসেনকে ফিরে পাওয়ার আকুল আবেদন জানিয়েছেন তার মা সুলতানা রাজিয়া।

বুধরাত রাতে যমুনা টেলিভিশনের টক শো ‘আমজনতা’য় যুক্ত হয়ে এ আর্তির কথা জানান তারা।

আবু ত্ব-হাকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তা চেয়েছেন জানিয়ে তার স্ত্রী সাবেকুন্নাহার জানান, প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করার আশায় একাধিকবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যান এবং কোনো উপায় আছে কিনা জানতে চান। সেখান থেকে তাকে বলা হয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি লিখে জমা দিতে। কথামতো চিঠি লিখে জমাও দেন তিনি।

তিনি বলেন, অনেক চেষ্টা করে অবশেষে পল্লবী থানায় অভিযোগটি গ্রহণ করাতে সমর্থ হয়েছি। প্রথম দিকে তারা জিডি গ্রহণ করতে রাজি হয়নি। প্রথমে আবু ত্ব-হার সর্বশেষ লোকেশন রংপুর, এমনটাই জানিয়ে পল্লবী থানা ফিরিয়ে দেয়। এরপর পুলিশের কাছ থেকে জানা যায় আবু ত্ব-হার সবশেষ লোকেশন নাকি গাবতলী ও মিরপুরের মাঝামাঝি কোনো জায়গা। পল্লবী থানা কোনো ভুল তথ্য দিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছিল?

সাবিকুন্নাহার তারপর যান পুলিশ হেড কোয়ার্টারে। কিন্তু সেখানে মহাপরিচালকের সাথে দেখা করতে ব্যর্থ হন তিনি। র‍্যাব হেড কোয়ার্টারে গিয়েও চিঠি জমা দিয়েছেন তিনি। সেখানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পৌছানোর চেষ্টা করে অবশেষে সফল হন এবং জানতে পারেন আবু ত্ব-হা নেই র‍্যাবের কাছে।

সাবিকুন্নাহার বলেন, আমি প্রশাসনকে সন্দেহ করছি না। কোনো অপহরণকারীও আমার স্বামীর নিখোঁজ হবার পেছনে আছে বলে মনে করি না। আমি ভরসা করে আছি প্রশাসনের উপর। তারা যদি চায় তো অতি অল্প সময়েই আমার নিখোঁজ স্বামীর হদিস পাওয়া যেতে পারে।

নিখোঁজ গাড়ি চালক আমিরের মা সুলতানা রাজিয়া তার সন্তানকে ফিরে পেতে আর্তনাদ করে বলেন, আমার ছেলের তো কোনো ভুল নাই। আমার ছেলে তো কেবল গাড়িতে করে যাত্রী নিয়ে গেছে। কোনো অন্যায় তো সে করেনি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি আমার ছেলেকে ভিক্ষা চাই।

সুলতানা রাজিয়া জানান, তার ছেলে আমিরের শেষ কথা হয় তার স্ত্রীর সাথে, ৮ তারিখ রাত সাড়ে ১২টায়। তখন আমির টাঙ্গাইল ছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

রংপুর থানা থেকে কোনো সহযোগিতা পাননি বলে জানান সুলতানা রাজিয়া। প্রশাসনের কোনো ব্যক্তিও আসেনি কোনো সাহায্য বা সান্ত্বনার বাণী নিয়ে। তিনি এখন সপ্রশ্ন দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছেন অদৃষ্টের দিকে। তিনি জানতে চান, তার ছেলে কবে ফিরবে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply