করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভারতে চলছে গণটিকাদান কার্যক্রম। কিন্তু টিকা নিয়ে নানা গুজব আর কুসংস্কারে ছেয়ে গেছে দেশটির প্রত্যন্ত অঞ্চল। টিকা দিতে গ্রামে স্বাস্থ্যকর্মী আসার খবর পেলে ঘটছে ভয়ে সপরিবারে জঙ্গলে লুকিয়ে পড়া কিংবা পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ার মত ঘটনা।
দেশটির প্রাপ্তবয়স্ক সব নাগরিক এই গণটিকা কার্যক্রমের আওতায় বিনামূল্যে টিকা পাচ্ছেন। কিন্তু প্রত্যন্ত গ্রামগুলোয় মানুষকে টিকাদানে আগ্রহী করাটাই বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে সেখানকার স্বাস্থ্য প্রশাসন।
মহামারিতে ভারতজুড়ে প্রায় ৩ লাখ ৮৯ হাজার মানুষের মৃত্যুর পরও ভারতের উত্তর প্রদেশের প্রত্যন্ত গ্রাম জামসোতির বাসিন্দাদের বদ্ধমূল ধারণা, কেবল শহরেই ছড়ায় করোনাভাইরাস। এমনকি প্রতিষেধক নিয়েও কুসংস্কারের শেষ নেই। টিকা নারীদের গর্ভধারণ ক্ষমতা নষ্ট করে এমন গুজবও প্রচলিত আছে।
প্রত্যন্ত অঞ্চলে করোনার টিকা নিয়ে সচেতনতা তৈরিতে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে রীতিমতো নাজেহাল হতে হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীদের। কেউ মুখের ওপর দরজা বন্ধ করছেন আবার কেউ-কেউ হচ্ছেন মারমুখী।
বন্দনা সিং নামে দেশটির একজন চিকিৎসক জানান, তারা এটা বিশ্বাস করতেই প্রস্তুত নয় যে, করোনাভাইরাস বলে কিছুর অস্তিত্ব আছে। তারা মনে করে এটা কিছুই না। তাদের ঘরের দরজায় দাঁড়াতেও দিতে চায় না আমাদের।
বিভা সিং নামে এক স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, পরীক্ষা করাতে বা বোঝাতে গেলে প্রায়ই মারধরের হুমকি দেয় অনেকে। এমনকি ইট পাটকেলও ছুড়ে মারে। নিজেদের কোনোমতে বাঁচাতে পারলেও গাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়।
ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন
ওই এলাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, সঞ্জিব সিং বলেন, কিছু ভুল ধারণার কারণে ক্যাম্পে টিকা নিতে আসেন না অনেকে। এটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। গ্রাম সুরক্ষা কমিটির সহায়তা নিচ্ছি।
ভারতে গ্রাম আর শহরে টিকা গ্রহণকারীর সংখ্যার পার্থক্য চোখে পড়ার মতো। নারী-পুরুষের ক্ষেত্রেও আছে ফারাক। এসব বৈষম্য দূর করতে ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছে ভারতের সরকার। পোস্টার, রেডিও-টেলিভিশনে চলছে ব্যাপক প্রচারণা। প্রত্যন্ত এলাকায় টিকা কেন্দ্রে যেতে দেয়া হচ্ছে পরিবহন সুবিধাও। বাড়ি বাড়ি গিয়েও চলছে সচেতনা কার্যক্রম।
Leave a reply