আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া প্রতিনিধি:
মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে চরম বিপাকে পড়েছেন মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
একটু উন্নত জীবনের স্বপ্ন নিয়ে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমানো মানুষগুলো এখন দুঃস্বপ্নের চোরাবালি থেকে বের হওয়ার পথ খুঁজছেন।
একদিকে কয়েক হাজার কর্মী দেশে ফিরে আটকে আছেন, কর্মস্থলে ফিরতে পারছেন না। অন্যদিকে দেশটিতে কঠোর লকডাউনে ঘরে বসে থাকা অনেকে বেকার সময় পার করছেন। আবার করোনাভাইরাসের প্রেক্ষিতে অর্থনীতিতে যে নেতিবাচক প্রবাহ শুরু হয়েছে তাতে মালয়েশিয়ান কর্মীদের চাকরি সংকুচিত হয়েছে। ফলে মালয়েশিয়ান সরকার আগে নিজ দেশের নাগরিকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার ওপর জোর দিচ্ছে।তাই চলমান এই বহুমাত্রিক সংকটে আয়ের পথ বন্ধ বহু প্রবাসী বাংলাদেশির।
কুয়ালালামপুর শহরের জালান ইপুহ এলাকায় থাকেন নরসিংদীর সোহাগ মিয়া। পাচঁ বছর ধরে দেশটিতে থাকলেও পরিস্থিতির কারণে এই মুহূর্তে কোনো বৈধ ভিসা নেই তার হাতে। কয়েক মাস ধরে কাজও নেই। এ অবস্থায় চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন তিনি। সোহাগ বলেন, প্রবাসজীবনে এমন কষ্টের দিন আর কখনো আসেনি। দেশে ফিরে যাব সেই রাস্তাও নেই। আর দেশে ফিরেই বা কী করব। তাই সব কষ্ট সয়ে ঘরে বসে আছি, কোনো রাস্তা পাচ্ছি না।
এদিকে কঠোর লকডাউনেও অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড় অব্যাহত রেখেছে মালয়েশিয়ান পুলিশ। গত ৬ জুন ও ২১ জুন অভিবাসন বিভাগের বড় দুইটি অভিযানে ৪৭৪ জন অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেফতার করে দেশটির ইমিগ্রেশন পুলিশ। এর মধ্যে ১৬৪ জন বাংলাদেশি রয়েছেন। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজা জয়নুদিন সামনের দিনেও এই ধরপাকড় অব্যাহত থাকবে বলে মালয়েশিয়ান গণমাধ্যমে জানিয়েছেন।
দালালের খপ্পরে মালয়েশিয়া এসে বিপাকে পড়া কুমিল্লার নূর উল্লাহ জানান, তাঁরা চার জন একসঙ্গে একটি মেসে থাকেন। চারজনের কারো কাছেই বৈধ ভিসা নেই। করোনাভাইরাসের কারণে এমনিতেই তাঁরা কাজ হারিয়েছেন। ধরপাকড় অব্যাহত থাকলে আরও বেকায়দায় পড়তে হবে।
ধরপাকড় অভিযানের বিষয়ে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন বলছে, এখানে আনুমানিক ১৫ থেকে ২০ লাখ অবৈধ বিদেশি শ্রমিক রয়েছে, তার মধ্যে বেশির ভাগই ইন্দোনেশিয়ান। অবৈধদের মধ্যে বাংলাদেশিদের অবস্থান দ্বিতীয়। এই অভিযান বাংলাদেশিদের উদ্দেশ্যে নয় বরং সকল অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের উদেশ্য করে পরিচালিত হয়।
Leave a reply