ভয়াবহ টিকা সংকটে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে বুস্টার ডোজ বিতর্ক। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ধনী রাষ্ট্রগুলোতে বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হলে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর টিকা পাওয়া আরও কঠিন হবে। যদিও টিকার কার্যকারিতার মেয়াদ নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য নেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে।
২০২০ সালের মার্চে ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। তার পরপরই শুরু হয় টিকাদান কর্মসূচি। সেই হিসেবে কারো কারো টিকা নেওয়ার বছর পার হয়েছে, অন্যদেরটাও হওয়ার পথে।
সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে যারা, বিশেষ করে বয়স্ক মানুষ, তাদের প্রতিবছরই বুস্টার ডোজ লাগবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এমন তথ্য ফাঁস হয়েছে গণমাধ্যমে। সেখানে বলা হয়, সাধারণ মানুষেরও দুই বছরে একবার লাগবে বুস্টার ডোজ।
আইসিডিডিআর’বির জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ড. ফিরদৌসী কাদরী বলেন, বুস্টার ডোজের ব্যাপারটি নতুন কিছু নয়। অনেক টিকাতেই বুস্টার ডোজ নিতে হয়। তবে এটা নিয়ে এখনও কোনও কিছুই স্থির করা হয়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, একটি দেশের ৭০ ভাগ মানুষকে টিকা না দিলে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা কঠিন। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত টিকা পেয়েছে মাত্র ৫০ লাখের মত মানুষ। সেই হিসেবে আরও বারো কোটি মানুষের জন্য দরকার ২৪ কোটি ডোজ। হাতে গোনা কয়েকটি বড় দেশ ছাড়া অন্যদের অবস্থাও একই রকম।
ড. ফিরদৌসী কাদরী বলছেন, আমরা তো টিকাই দিতে পারছি না। যেখানে আমরা মাত্র ২ শতাংশ টিকা দিতে পেরেছি সেখানে উন্নত দেশগুলোতে ৫০ থেকে ৯০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন আবার যদি বুস্টার দেওয়া হয়। তবে আমাদের টিকা যাবে কই।
ভ্যাকসিনের ন্যায্য বণ্টন নিশ্চিত করতে গঠন করা হয়েছিল বৈশ্বিক উদ্যোগ কোভ্যাক্স। কিন্তু বড় দেশগুলোর কারণে সেই উদ্যোগও এখনও পর্যন্ত তেমন কাজে আসেনি।
এই বিজ্ঞানী বলেন, আমরা ভেবেছিলাম আন্তর্জাতিকভাবে টিকার সুষম বণ্টন হবে, কিন্তু সেটা হয়নি। এখন বুস্টার দেওয়া হলে আমাদের টিকা পেতে আরও অনিশ্চয়টা তৈরি হবে।
এ পর্যন্ত প্রায় আড়াইশ কোটি ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে সারাবিশ্বে, যার প্রায় পুরোটাই ধনী দেশগুলোতে। আগামী এক বছরে তৈরি হবে এক হাজার ২শ কোটি ডোজ। সেই টিকার ন্যায্য বণ্টন নিশ্চিত করার তাগিদ দিচ্ছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা।
Leave a reply