অনাহারীর মুখে যারা খাবার তুলে দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া লালমাটিয়ার সেই মেহমানখানার কথা মনে আছে নিশ্চয়। এমন উদ্যোগে অসংখ্য নিরন্ন মানুষের মুখে হাসি ফুটলেও ভালো নেই এর উদ্যোক্তারা। আর্থিক টানাপোড়ন তো আছেই কখনো পাগল, কখনোবা চোরের তকমা জুটেছে কপালে। এরই মাঝে বাড়ি ছাড়াও করা হয়েছে তাদের। তবুও দমে যাননি তারা। চলমান বিধিনিষেধে আবারও চালু হয়েছে সেই মেহমানখানা।
করোনার মহাসংকটে মানুষের প্রাণ বাঁচানোর এই যুদ্ধের সারথি লালমাটিয়ার একদল স্বেচ্ছাসেবক। লালমাটিয়ার মেহমানখানা নামে চলা এই উদ্যোগে রোদ-ঝড়-বৃষ্টি যেকোনো পরিস্থিতিতে খাবার জুটে রিকশা চালক, সিএনজি-অটো চালক, দিনমজুর, খুদে দোকানি আর ক্ষুধার্ত পথশিশুদের প্লেটে।
করোনার এই প্রায় দেড় বছরে রিকশাচালকদের অন্যতম ভরসার স্থান হয়ে উঠেছে এই মেহমানখানা। দিনে দিনে এখানে বাড়ছে নতুন মুখের সংখ্যাও। নিজেরা খেয়ে পরিবারের বাকি সদস্যের জন্য খাবার নিয়ে যান তারা
মেহমানখানার উদ্যোক্তা আসমা আক্তার লিজা বলেন, এখানে সবাই যার যার মত সাহায্য করে। কেউ হয়তো এক বস্তা চাল কিনে দেয়, কেউ তেল, কেউ মুরগি কিনে দেয়। আবার কেউ একবেলা খাবারের টাকা বিকাশে পাঠিয়ে দেয়।
তবে মহৎ এই উদ্যোগ ভুগছে আর্থিক টানাপোড়ন আর সামাজিক নানাবাধা প্রতিকূলতায়। তবে এতে মনোবলে চিড় ধরেনি স্বেচ্ছাসেবকদের।
আসমা আক্তার লিজা বলেন, আমাকে পাগল উপাধি দেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি ভাল কাজের জন্য এই পাগলটুকু আমি থাকতে চাই। আমার ভাল হওয়ার দরকার নেই।
তাকে এই কাজের জন্য ঘরছাড়া হতে হয়েছে বলেও জানান তিনি। লিজা বলেন, আগে আমাকে ঘরছাড়া করা হয়েছে। আর এখন নানা সামাজিক প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে পথ থেকেও উঠিয়ে দিতে চাওয়া হচ্ছে।
গেলো বছরের সরকারি বিধিনিষেধের সময় চালুর পর ভালোই সাড়া মিলেছে এই মেহমানখানায়। তবে, এই কার্যক্রম বন্ধের জন্য শুরু হয়েছে নানামুখী তৎপরতা।
Leave a reply