আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়া চলমান থাকা অবস্থাতেই একের পর এক জেলা দখলে নিচ্ছে তালেবান। শুক্রবার (৯ জুলাই) পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা দখলে নিলো আফগানিস্তানের এই জঙ্গি গোষ্ঠীটি।
আলো জাজিরার এক খবরে বলা হয়, আফগান কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলের হেরাথ প্রদেশে ইরানের সঙ্গে স্থলবাণিজ্যের অন্যতম পথ সীমান্তবর্তী শহর ইসলাম কালা এবং তুর্কমেনিস্তানের সঙ্গে দুটি স্থল বাণিজ্যপথের একটি সীমান্তবর্তী শহর তোড়গুন্ডি দখলে নিয়েছে তালেবানরা। এই দুই গুরুত্বপূর্ণ সীমান্তবর্তী এলাকা দখলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে একজন তালেবান মুখপাত্র।
হেরাথ প্রদেশের শুল্ক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নিসার আহমাদ নাসেরি বলেন, তালেবান দখলে নেওয়ার পর থেকে ইসলাম কালা কাস্টমস অফিসের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে যে, তালেবান যোদ্ধারা আফগানিস্তান-ইরান সীমান্তে ইরানি সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর সঙ্গে কথা বলছে।
জানা গেছে, তালেবানদের আসার খবর পেয়ে ইসলামকালা কাস্টমস অফিসের কর্মকর্তা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর অসংখ্য সদস্য সীমান্ত অতিক্রম করে ইরানে আশ্রয় নিয়েছেন। ইসলামকালা স্থলবন্দর আফগানিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ একটি বাণিজ্যপথ। প্রতি মাসে এ বন্দর থেকে আফগান সরকার প্রায় ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার শুল্ক লাভ করে।
এদিকে আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে নিজেদের সব সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা বাস্তবায়নের প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টকম এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আফগানিস্তান থেকে ইতোমধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে দেশটি।
যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়ার মধ্যেই আফগানিস্তানের ৩৪ টি প্রদেশের প্রায় ২০০ টি জেলা নিজেদের দখলে নেয়ার দাবি জঙ্গি-গোষ্ঠী তালেবানের। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে তালেবানদের সংঘর্ষ চলছে
প্রায় প্রতিদিনই।
যুক্তরাষ্ট্র ২০০১ সালে আফগানিস্তানে আগ্রাসন শুরু করে। দুই দশকের এই যুদ্ধে মার্কিন সামরিক বাহিনীর দুই হাজার তিনশর বেশি সদস্য প্রাণ হারান। আহত হন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর হাজার হাজার সেনা। পাশাপাশি অগণিত আফগান নাগরিক যুদ্ধের বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। আফগানিস্তান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র দুই ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ খরচ করে ফেলেছে।
Leave a reply