অন্তত পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের মন জয় করতে পেরেছি: সাদিক আব্দুল্লাহ

|

বরিশালে ইউএনওর বাসায় হামলার ঘটনায় করা মামলায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে প্রধান আসামি করা হয়। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় সিটি সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ময়লা-আবর্জনা অপসারণের কাজ বন্ধ রেখেছেন। তার প্রেক্ষিতে সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, সবসময় দেখেছি কর্মচারী কর্মকর্তারা মেয়রের বিরুদ্ধে মাঠে নামেন, আজকে আমার সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা আমার জন্য মাঠে নেমেছে। বরিশালের জনগণের মন জয় করতে পেরেছি কিনা জানি না, তবে আমি অন্তত পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের মন জয় করতে পেরেছি। তবে জনদুর্ভোগ কমাতে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কাজে ফিরতে অনুরোধ করেছেন তিনি।

শনিবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বরিশালের সাধারণ মানুষের কোনো দোষ নেই। ময়লা পরিষ্কার না করা হলে বরিশালের জনগণ দুর্ভোগের মধ্যে পড়বে। তাই পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের তাদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।

এছাড়া প্রশাসনের কাছে তিনি অনুরোধ করেন, তারা যেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বাসায় বাসায় গিয়ে তাদের ভোগান্তির সৃষ্টি না করেন, এতে সাধারণ নাগরিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন। সিটি কর্পোরেশনের যেসব কর্মচারীরা পুলিশের ভয়ে বাসায় যাচ্ছেন না, তাদেরও বাসায় ফিরতে অনুরোধ করেন তিনি। তাদেরকে সিটি কর্পোরেশনের নিয়মিত কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।

ইউএনওর বাসায় হামলা ও সরকারি কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে দায়ের হওয়া আলাদা দুই মামলাতেই প্রধান আসামি করা হয়েছে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে। বরিশাল সদর উপজেলার ইউএনও মুনিবুর রহমান এবং পুলিশের এক এস আই শাহজালাল মল্লিক বাদী হয়ে কোতোয়ালী মডেল থানায় পৃথক দুইটি মামলা করেন।

মামলা দুইটিতে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ৯৪ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত, মান্না, আতিকুল্লাহ মুনিম, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব হোসেন খান, মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিমল চন্দ্র দাস, ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ সাইয়েদ আহম্মেদ, মহানগর ছাত্রলীগ নেতা অনিক সেরনিয়াবাত, রইজ আহম্মেদ মান্না প্রমুখ।

গত বুধবার রাতে বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইউএনও মুনিবুর রহমানের বাসভবনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যদের সাথে পোস্টার অপসারণ নিয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের কর্মীদের তর্ক বাঁধে। ঘটনার একপর্যায়ে ইউএনও মুনিবুর রহমানের সাথেও বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় গুলি চালায় আনসার সদস্যরা।

এরই জের ধরে, ইউএনওর বাসায় হামলা চালানো হয়। বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাদ সাদিক আবদুল্লাহ ও বরিশালের আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে সেখানে তুমুল হট্টগোল তৈরি হয়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে পুলিশের সাথে আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ নির্বিচারে সেখানে লাঠিচার্জ করে প্রায় দুই ঘণ্টার ধাওয়া পালটা ধাওয়া শেষে নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ঘটনার পর থেকে বরিশাল শহরজুড়ে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply