তদন্ত কমিটির সাথে অসহযোগিতা করছেন ‘শিক্ষার্থীদের চুল কেটে দেয়া’ সেই শিক্ষক

|

সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চুল কাটার ঘটনায় এখনও প্রতিবেদন জমা দেয়নি তদন্ত কমিটি। এদিকে তদন্ত কমিটির সাথে অসহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষার্থীদের চুল কেটে দেয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান ও বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক লায়লা ফেরদৌস হিমেল যমুনা নিউজকে জানান, তদন্তের কাজ শেষ। এ পর্যন্ত শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট ৫২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া ভিডিওসহ অন্যান্য আলামত সংগ্রহ ও পর্যালোচনার কাজ শেষ। তবে মানবিক কারণে অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের বক্তব্য নেয়ার জন্য দুই দফা চেষ্টা করলেও তারা ব্যর্থ হয়েছেন।

লায়লা ফেরদৌস জানান, এর আগে অভিযুক্ত শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অসুস্থতার কথা বলে দুই সপ্তাহ সময় চান। যদিও প্রথম পর্যায়ে তিনি কোনো চিকিৎসার প্রমাণ দেখাননি। তবে তার সময় চাওয়ার ব্যাপারে তদন্ত কমিটি কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। এরপর আবারও তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অসংযত আচরণ করেন বলেও জানান তদন্ত কমিটির প্রধান।

লায়লা ফেরদৌস হিমেল জানান, একপর্যায়ে অভিযুক্ত শিক্ষক তদন্ত কমিটির সদস্যদের ব্যাপারে বিস্তারিত জানেন না বলে অভিযোগ তুলেছিলেন। তবে তদন্ত কমিটির ব্যাপারে কোনো অনাস্থার কারণে তিনি বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এরকম কিছু থাকলে তিনি প্রথমেই তা উল্লেখ করতেন। তা না করে তিনি এই কথা সম্প্রতি বলেছেন। তাছাড়া এ ব্যাপারে তার কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্যও নেই বলে জানান লায়লা ফেরদৌস। তিনি বলেন, কমিটির সদস্যদের ব্যাপারে তার না জানার কোনো কারণ নেই। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে বিভাগীয় প্রধানসহ সবাইকে চিঠি দিয়েছে।

অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের বক্তব্য পেতে বিলম্ব হলে তার বক্তব্য ছাড়াই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে কিনা, যমুনা নিউজের এমন প্রশ্নের জবাবে কমিটি প্রধান বলেন, প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য তার বক্তব্য থাকতেই হবে এমন কোনো কথা নেই। মানবিক কারণেই তার বক্তব্য নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

আগামী সোমবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে জানিয়ে লায়লা ফেরদৌস বলেন, এর মধ্যে বক্তব্য না পেলে শেষপর্যন্ত বক্তব্য ছাড়াই প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। ‌উল্লেখ্য, এর আগে গত রোববারের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল।

লায়লা ফেরদৌস হিমেল বলেন, দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের চাপ রয়েছে। মানবাধিকার কমিশন নিয়মিত এ ব্যাপারে তাড়া দিচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষকের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, গত ২৬ সেপ্টেম্বর পরীক্ষার হলে ১৪ ছাত্রের মাথার চুল কেটে দেয়ার অভিযোগ ওঠে ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার জেরে একজন শিক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা করলে এ নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানার অপসারণ দাবিতে আন্দোলন ও অনশন শুরু করেন। পরে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত করার জন্য লায়লা ফেরদৌস হিমেলকে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। অভিযুক্ত ফারহানা চুল কাটার কথা অস্বীকার করলেও এর প্রমাণস্বরূপ সিসিটিভির কিছু ফুটেজ জনসম্মুখে এসেছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply