বিনাদোষে মাজেদার সন্তানসহ ৬ বছরের বন্দিজীবন

|

প্রতিবেশি শিশু রুম্মান হত্যা মামলায় প্রথম স্বামী ও শ্বশুরের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ৬ বছরের বন্দিজীবন কাটে রংপুরের মাজেদা বেগমের। নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হলেও উচ্চ আদালতে গিয়ে খালাস পান এই নারী। তবে মাজেদাকে নির্দোষ প্রমাণ করতে গিয়ে ভিটেমাটি বিক্রি করতে হয়েছে তার স্বামীকে। জোর করে যারা মাজেদাকে হত্যা মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করেছিল, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন আইনজীবী।

রংপুরের জগদিশপুরের ভ্যান চালক সাজু মিয়ার দুই স্ত্রী জেলেখা বেগম ও মাজেদা বেগম। সতীন হলেও মিলে মিশে থাকার অনন্য দৃষ্টান্ত এই পরিবার। তবে সাজু মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী মাজেদার গল্পটা ভিন্ন। গঙ্গাচড়ার ঠাকুরাদহ মন্দির পাড়ায় ২০০৭ সালের ৩ জুলাই প্রতিবেশি শিশু রুম্মান হত্যা মামলায় গ্রেফতার হন মাজেদা। ১৬ মাস জেল খাটার পর জামিনে বেরিয়ে ঠাঁই হয়নি প্রথম স্বামী সামসুল হকের ঘরে। এরপর খালাতো ভাইকে বিয়ে করে মাজেদা। ২০১৫ সালে হত্যা মামলায় মাজেদাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় রংপুর অতিরিক্ত দায়রা জজ-২ আদালত। ১৩ মাসের সন্তানকে নিয়ে মাজেদার আশ্রয় হয় কনডেম সেলে।

পরে আদালতে দাখিল করা নথিপত্রে প্রমাণ হয় প্রথম স্বামী সামসুল হক ও শ্বশুর আব্দুল খালেক মাজেদাকে ধর্ষণ ও সন্তানকে হত্যার হুমকি দিয়ে মিথ্যা জবানবন্দি দিতে বাধ্য করে। শেষ পর্যন্ত ২০২০ সালে মাজেদাকে খালাস দেন উচ্চ আদালত। ততদিনে মাজেদা ছেলে মারুফকে নিয়ে জেল খেটেছেন ৬ বছর।

উচ্চ আদালতের রায়ের প্রায় ১ বছর পর চলতি বছর ১৭ আগস্ট রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেল থেকে সন্তানসহ মুক্তি পান মাজেদা। অন্যদিকে স্ত্রীর মামলা চালাতে গিয়ে সর্বস্বান্ত সাজু।

তবে ভয় দেখিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেয়ায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালেন মাজেদার আইনজীবী জোবাইদুল ইসলাম।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply