বিশ্বের এক-চতুর্থাংশ মানুষ ভুগছেন সুপেয় পানির সংকটে! ক্রমবর্ধমান দুর্যোগের প্রভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই প্রাকৃতিক উপাদান। ভয়াবহতার মাত্রা সবচেয়ে তীব্র এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশ। সংকট নিরসনে এসব অঞ্চলের দেশগুলোকে পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান ডাব্লউএমও’র।
চলতি বছর টানা বৃষ্টিপাতে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের কবলে পড়ে তুরস্ক। প্রতিবছর এমন নানা দুর্যোগ বেড়েই চলেছে বিশ্বে। আর এই দুর্যোগই শেষ কথা নয়। বরং দীর্ঘ সময় থেকে যায় এর প্রভাব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একদিকে দিন দিন বাড়ছে পানি সংক্রান্ত দুর্যোগ। আরেকদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের বড় শিকার পৃথিবীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই উপাদান। এতে শঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের আবহাওয়া বিষয়ক সংস্থা ডব্লিউএমও।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার মহাপরিচালক পেত্তেরি তালাস বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়ছে পানির ওপর। বেশিরভাগ দুর্যোগের ক্ষেত্রে পানি গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।
বন্যা, খরা, সাইক্লোনসহ সবচেয়ে বেশি হওয়া দুর্যোগগুলোর অধিকাংশই পানি সম্পর্কিত। কোথাও দেখা যায় পানির অভাব, কোথাও আবার দূষিত হচ্ছে, কিংবা বাড়ছে লবণাক্ততা। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বর্তমানে বিশ্বের এক চতুর্থাংশ মানুষ ভুগছে সুপেয় পানি সঙ্কটে।
ভয়াবহতার মাত্রা সবচেয়ে তীব্র এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশ। সঙ্কট নিরসনে এসব অঞ্চলের দেশগুলোকে পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান ডব্লিউএমও-র।
পেত্তেরি তালাস আরও বলেন, জরুরি ও কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে বরফ গলার হার অব্যাহত থাকবে। আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে কার্বন-ডাইন-অক্সাইডের পরিমাণ। অর্থাৎ, এই সঙ্কট সহজে কাটছে না। বিশ্বের অন্তত ১০৭টি দেশ রয়েছে, যারা পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। খরা ও বন্যা নিরসনে বিনিয়োগ বাড়ানো উচিত এশিয়া ও আফ্রিকা অঞ্চলের।
গেলো বিশ বছর ধরে, এন্টার্কটিকা ও গ্রিনল্যান্ডে বরফ গলছে বছরে গড়ে এক সেন্টিমিটার করে। এ সময়ের মধ্যে পৃথিবীতে নাটকীয়ভাবে বেড়েছে বন্যার পরিমাণ। যা আগের তুলনায় ১৩৪ শতাংশ বেশি। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে বায়ুমণ্ডলের আদ্রতাও। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এশিয়া। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন রোধে এখনই যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে, পরিণতি হবে আরও ভয়াবহ।
Leave a reply