শিশুর মাথা তথা মস্তিষ্কের ওপর যাতে বেশি চাপ না পড়ে, সেজন্য সম্প্রতি অভিভাবকদের নির্দেশনা দিয়েছে চীন সরকার। কিন্তু এদিকে চীনা বাবা-মায়েরা যেন খুঁজছেন সন্তানদের মাথায় চাপপ্রয়োগের নানা সৃজনশীল পন্থা। তবে সেই চাপ পড়াশোনার জন্য নয়, বরং মাথা গোল বানানোর জন্য!
হ্যাঁ, গোল মাথা সুন্দর- এমন অদ্ভুত বিশ্বাসে চীনা বাবা-মায়েরা ঝুঁকছেন ‘অলৌকিক’ সব প্রযুক্তির দিকে। সন্তানের মাথা যাতে ঈষৎ চ্যাপ্টা না হয়ে পূর্ণ গোল হয়, এই আশায় তারা সন্তানের নরম মাথায় পরাচ্ছেন বিশেষ হেলমেট। যা পরিণত হয়েছে দেড়শ কোটি মানুষের দেশটির নয়া ট্রেন্ড! সম্প্রতি সাউথ চীনা মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
চীনের ট্রেন্ডসেটিং ফোরাম জিয়াওহংশুর মতো প্ল্যাটফর্মে অনেক বাবা-মা শিশুদের জন্য এমন উপকরণ খুঁজছেন। চলতি বছরের সেপ্টম্বরে জিয়াওহংশুতে দেওয়া এক পোস্টে এক মা লিখেছেন, পরিবারের আপত্তির পরও আমি আমার বাচ্চার মাথার আকৃতি ‘ঠিক’ করেছি।
তিনি আরও বলেন, আমার বাচ্চাটি চিৎ হয়ে ঘুমাতে পছন্দ করে। কিন্তু এভাবে ঘুমানোর ফলে শিশুটির মাথা সমান আর ছড়ানো মনে হচ্ছিল। তাই তিনি শিশুটিকে এক কাত করে ঘুমানোর অভ্যাস করানোর চেষ্টা করেন। তবে এতে কোনো লাভই হচ্ছিল না।
পরে তিনি সাত মাস বয়সী শিশুটিকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে মেয়েটির মাথা প্রথমে প্লাস্টার দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়। এরপর মাথার আকৃতি ঠিক করতে মাথায় বসিয়ে দেওয়া হয় বিশেষভাবে তৈরি ছাঁচ। ছাঁচটি চাইলেই খুলে ফেলা যায়। তবে এটি শিশুর মাথায় দীর্ঘক্ষণ রাখার উপযোগী করে তৈরি। মাথার গড়নকে সুগঠিত করা এই ছাঁচের কাজ।
এদিকে জিয়াওহংশুতে এই ঘটনা শেয়ার করার পর অনেকেই ওই নারীর সমালোচনায় সরব হয়েছে। কেউ কেউ অবশ্য নতুন এই ট্রেন্ডকে সত্যিকার অর্থেই ‘করে দেখানোর’ জন্য তার প্রশংসাও করেছেন।
এ ব্যাপারে ওই মা জানান, আমি মনে করি শিশুর মাথায় হেলমেট পরানো, দাঁতের আকৃতি ঠিক করার জন্য ব্রেস পরার মতো। আমার নিজের মাথাও চ্যাপ্টা। আমি জানি সৌন্দর্যের পেছনে ছুটতে থাকা নারীদের জন্য এটা কতটা বেদনাদায়ক। আমি চাই না আমার মেয়েও এটা নিয়ে বেড়ে উঠুক আর নিজের শরীরের এই অংশের আকৃতির জন্য কষ্ট পাক।
Leave a reply