অপ্রাপ্তবয়স্কাকে মায়ের পাশের কক্ষে ধর্ষণ করেছিলেন ম্যারাডোনা!

|

ছবি: সংগৃহীত

প্রয়াত ফুটবল কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনার বিরুদ্ধে ধর্ষণ, অপহরণ ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন কিউবান নারী মাভিস আলভারেজ। প্রায় দুই দশক আগে ম্যারাডোনার সাথে সম্পর্ক থাকাবস্থায় এই ফুটবল জাদুকর অপ্রাপ্তবয়স্কা মাভিসকে তার মায়ের পাশের কক্ষেই ধর্ষণ করেন বলে এসেছে অভিযোগ। এছাড়া মাভিস বলেন, ম্যারাডোনা তার শৈশব চুরি করেছেন।

আর দুইদিন পরেই বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফুটবলার দিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। আর তার ঠিক আগেই এই ফুটবল বিস্ময়ের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় নিয়ে হাজির হয়েছেন ৩৭ বছর বয়সী মাভিস আলভারেজ। এবং তার অভিযোগ সবকটিই অত্যন্ত গুরুতর। অবশ্য জীবনকালেই যার নামের প্রতিশব্দ হয়ে গিয়েছিল বিতর্ক, তার মৃত্যুর পর যে খুব দ্রুতই মুছে যাবে সব প্রশংসা-নিন্দার প্রবাহ সেটিও বা কেমনে আশা করা যায়। আর এবার তো সামনে হাজির এমন সব ঘটনা, যা প্রমাণিত হলে ম্যারাডোনার আত্মজীবনীতে নিশ্চিতভাবেই কালো কালির ব্যবহার কিছুটা বাড়বে।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুসারে, ম্যারাডোনার উপর মাভিস যে সময়কার অভিযোগ এনেছেন, সেটা ২০০১ সালের ঘটনা। তখন মাত্র ১৬ বছরের মাভিস ৪০ বছর বয়সী ম্যারাডোনার সাথে কিউবা থেকে আর্জেন্টিনা আসেন। সে ঘটনার মাত্র দিনকয়েক আগেই ম্যারাডোনার সাথে পরিচয় হয় তার। আর্জেন্টাইন ফুটবল ঈশ্বর তখন মাদক নিরাময়ের চিকিৎসা নিচ্ছিলেন কিউবাতে।

বুয়েনস এইরেসে এক প্রেস কনফারেন্সে মাভিস জানান, হাভানার যে চিকিৎসালয়ে ম্যারাডোনা ছিলেন তার পাশের কক্ষেই ছিলেন মাভিসের মা। কিন্তু সেই কক্ষেই ম্যারাডোনা তার মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করেন, যেন মাভিস কোনো রকমের শব্দ করতে না পারেন। মাভিস বলেন, সে আমার মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করেছিল। আমার মা আমাকে খুঁজছিলেন। কিন্তু কোন কক্ষে আমি ছিলাম তা জানতেন না। কেঁদেকেটে শেষ পর্যন্ত চলেই গিয়েছিলেন তিনি। তবুও দরজা খোলেননি ম্যারাডোনা। এটা নিয়ে আর খুব বেশি কিছু ভাবতে চাই না আমি। সে আমার সরলতাকে খুন করেছে, আমার শৈশবকে চুরি করেছে।

ম্যারাডোনা ও মাভিস। ছবি: সংগৃহীত

এর আগে মিডিয়ার সামনে দিয়েগোর সাথে সম্পর্ককে দ্বিপাক্ষিক বলেই জানিয়েছিলেন মাভিস। তবে ম্যারাডোনা যে অন্তত একবার তাকে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্কে জড়াতে বাধ্য করেছিলেন, সেটা লুকাননি এই কিউবান নারী। তিনি আরও বলেন, আমি ম্যারাডোনার প্রেমে পড়েছিলাম। সে আমাকে জয় করেছিল। তবে মাস দুয়েক পার হতেই অনেক কিছু পাল্টাতে শুরু করে। সে আমাকে জোর করে কোকেন সেবন করাতে চেয়েছিল। শারীরিক নির্যাতনের ঘটনাও ঘটেছে অনেকবার।

বর্তমানে মিয়ামিতে বাস করা মাভিস আলভারেজ বলেন, আমি তাকে ভালোবাসতাম। আবার ঘৃণাও করতাম। তার কারণে অনেকবার আত্মহত্যার কথাও ভেবেছি আমি। কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রো যদি এ ঘটনার সাথে যুক্ত না থাকতেন তবে আমাকে আমার পরিবারও মেনে নিতো না। এছাড়া এই সম্পর্ককে আমার পরিবার মেনে নিতে অনেকটা যেন বাধ্যও হয়েছিল। যদিও জীবনের সেই অধ্যায়টা আমার বা পরিবারের কারও জন্যই ভালো ছিল না।

ফিদেল কাস্ত্রোর সাথে ম্যারাডোনা ও মাভিস। ছবি: সংগৃহীত

ম্যারাডোনার জীবদ্দশায় আর্জেন্টিনায় যাওয়া তার জন্য বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার ছিল বলে জানিয়েছেন মাভিস। তিনি বলেন, আর্জেন্টিনায় যাওয়া আমার জন্য বেশ শক্ত। কারণ সেখানে সর্বত্রই ম্যারাডোনা। এখানে সে সাক্ষাৎ ঈশ্বর। আর আমার স্মৃতিতে রয়ে গেছে কেবল তার কুৎসিত সব রূপ।

ম্যারাডোনার আইনজীবী মাতিয়াস মোরলা এখনও সর্বকালের অন্যতম বর্ণীল এই চরিত্রের নামে আসা অভিযোগসমূহ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তাছাড়া রয়টার্সের খবরে এসেছে, মাতিয়াস ছাড়া এ ব্যাপারে অন্য কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তিকেও খুঁজে পায়নি তারা। এছাড়া উক্ত বিতর্ক নিয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি কিউবান সরকারের তরফ থেকেও।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply