করোনাভাইরাসের চেয়েও ভয়াবহ সংক্রমণে বিধ্বস্ত হতে পারে সভ্যতা। পৃথিবীর বাইরে থেকে আসা আরও ভয়াবহ, আরও বিধ্বংসী অণুজীবদের মাধ্যমে। আর সভ্যতার পক্ষে সেই সংক্রমণ রোখা আরও দুঃসাধ্যের হয়ে উঠতে পারে।
এই সপ্তাহেই আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘বায়োসায়েন্স’ এ প্রকাশিত একটি গবেষণায় এই হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।
আমেরিকার দুই ধনকুবের জেফ বেজোস ও ইলন মাস্ক এবং ব্রিটেনের ধনকুবের রিচার্ড ব্র্যানসন ইতোমধ্যেই ঘোষণা করেছেন, আগামী বছর থেকেই আমজনতার জন্য খুলে দেওয়া হবে মহাকাশ। টিকিট কেটে তাদের সংস্থাগুলির মহাকাশযানে চেপে মহাকাশ ভ্রমণে যেতে পারবেন যে কেউই।
শুধুই এই তিন ধনকুবেরের সংস্থাই নয়। এমন প্রায় ৮৫টি সংস্থা এ ব্যাপারে ইতোমধ্যেই কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে।
আর তাতেই অশনি সঙ্কেত দেখতে পেয়েছেন গবেষকরা। তাদের গভীর আশঙ্কা, সামনের বছর থেকে ওই সব মহাকাশ ভ্রমণের মাধ্যমেই পৃথিবীতে এসে পৌঁছবে আরও বিধ্বংসী অণুজীব। মহাকাশযানের মাধ্যমে বা মহাকাশে যারা ঘুরতে যাবেন, তাদের সঙ্গেই পৃথিবীতে এসে পৌঁছবে আরও ভয়াবহ সংক্রমণ ছড়াতে সক্ষম বিধ্বংসী অণুজীবরা।
এই কথা ঠিক, পৃথিবীর বাইরে এখনো পর্যন্ত অণুজীবের হদিস পাওয়া যায়নি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, পৃথিবীর বাইরে অণুজীবের অস্তিত্ব নেই। কারণ, পৃথিবীতে যে তাপমাত্রা ও পরিবেশে অণুজীবের সৃষ্টি ও বিকাশ হয়েছিল, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীর বাইরে মহাকাশে, এই সৌরমণ্ডলেরই অন্যান্য গ্রহ আর তাদের উপগ্রহে সেই তাপমাত্রা ও পরিবেশ রয়েছে।
শুধু তাই নয়। এটাও দেখা গেছে, পৃথিবী থেকে গবেষণার জন্য নিয়ে যাওয়া অণুজীবরা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গিয়ে ভরশূন্য অবস্থায় আরও দ্রুত হারে মিউটেশন করতে পারছে। সেই নতুন নতুন মিউটেশনগুলো পৃথিবীতে কখনো করেনি সেই অণুজীবরা। ফলে, এই মিউটেশনগুলো যে সেই অণুজীবরা করতে পারে আর তাদের রোখার জন্য মানবদেহের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা আদৌ প্রস্তুত নয় সেটাও বিজ্ঞানীদের এখন জানা হয়ে গেছে।
গবেষকদের আশঙ্কা, এইসব মিউটেশনে সক্ষম অণুজীবরা এবার মহাকাশযানের মাধ্যমে ও মহাকাশ ভ্রমণে যাওয়া মানুষের সঙ্গে পৃথিবীতে ফিরে আসার পথ পেয়ে যাবে। যা নভোচারীদের মহাকাশে নিয়ে যাওয়া আর সেখান থেকে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রেও ঘটত। কিন্তু তাদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে এনে একটি বিশেষ সুরক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে রাখা হয় বলে তা সংক্রমণ ঘটানোর সুযোগ পায়নি। কিন্তু বাণিজ্যিকভাবে মহাকাশ ভ্রমণ আগামী বছর থেকে শুরু হয়ে গেলে আর সেই ভ্রমণ ঘনঘন হতে থাকলে সভ্যতার উপর সেই বিপদ ঘনিয়ে আসতে খুব দেরি হবে না।
মহাকাশ স্টেশনের অভিজ্ঞতা জানাচ্ছে, পৃথিবী থেকে নিয়ে যাওয়া নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া মহাকাশে ভরশূন্য অবস্থায় এমন সব মিউটেশন করেছে, যা ভয়াবহ। অত্যন্ত বিপজ্জনক। মহাকাশ ভ্রমণে যাওয়া যে কারো সঙ্গেই পৃথিবী থেকে আগামী দিনে আরও নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া যেতে পারে মহাকাশে। তারাও বিভিন্ন নতুন নতুন মিউটেশনের মাধ্যমে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
Leave a reply