হায়রে মানুষ, বিপন্ন মানুষ। প্রাণ বাঁচাতে দিশেহারা, দিগ্বিদিগ ছুটে চলা একদল রক্ত মাংসের মানুষ। স্রোতের মতো আসছে তারা এই শ্যামল বাংলাদশে।
কিন্তু কেন আসছে? কোন মনোবেদনায় প্রাণের চেয়ে প্রিয় ভিটেমাটি ছেড়ে এ ছুটে চলা? হয়ত কুঁড়েঘরেই থাকা, তবুও নিজ হাতে গড়া তো। সেখানেই যে ছিল স্বপ্নের বসবাস। আরেকদল মানুষের নৃশংসতা কেড়ে নিল সব কিছু।
জীবন হাতে নিয়ে দেশত্যাগ করা মানুষগুলোর মুখে ঘুরে ফিরে আসছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নৃশংসতা। একের পর এক গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে মিলিটারিরা। নির্বিচারে গুলি করে মেরেছে পুরুষদের, মেয়েদের করেছে ধর্ষণ। অনেককে হত্যার পর পুড়িয়ে ফেলে হয় বলেও জানান কেউ কেউ।
জীবনের সব সুখ আর আহ্লাদ হারিয়েছে নিজে দেশে পরবাসী মানুষগুলো। কী অপরাধ তাদের? রোদ-বৃষ্টি-ঝড় উপেক্ষা করে ফসল ফলাতো তারা। সেই অধিকারটুকু কেড়ে নেয়ায় হতাশা প্রকাশের বোধটুকুও হারিয়ে ফেলেছে।
শুধু মুসলমান নয়, সামরিক বাহিনীর বর্বরতার শিকার হয়েছে রাখাইনের হিন্দুরাও। কক্সবাজারের উখিয়ার একটি ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে এমন ৮৬টি হিন্দু পরিবারের প্রায় ৭শ’ মানুষ। মিয়ানমার সরকারের ধ্বংসযজ্ঞে সিঁথির সিঁধুর মুছে গেছে এদের অনেকেরই। চোখের সামনে স্বামীকে হারানোর কষ্ট তাড়িয়ে ফিরছে অনেককে।
এমনই একজন জানালেন, ‘আমাদের ধরে পাহাড়ে নিয়ে যায় মিলিটারিরা; সেখানে আমাদের সামনেই পুরুষদের কেটে ফেলে।
আমার দুই ভাই, স্বামী ও কাজের ছেলেকে কুপিয়ে মেরেছে ওরা। প্রাণ নিয়ে পালিয়েছি। গরু-ছাগল, সহায়-সম্বল সব ছেড়ে এক কাপড়েই দেশ ছেড়েছি।’
লাখ লাখ শরণার্থীর ঠাঁই এখন বাংলাদেশে। প্রতিবেশীর আস্থা আর বিশ্বাসের আশ্রয়ে থাকা। কিন্তু তা কতোদিন? সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যত।
যমুনা অনলাইন: টিএফ
Leave a reply