ফরিদপুরে তরুণীর পেটে কাঁচি রেখেই সেলাই, এক বছর পর জানলো পরিবার

|

এক্সরে করার পর সেই তরুণীর পেটে কাঁচির উপস্থিতি ধরা পড়ে।

ফরিদপুর প্রতিনিধি:

ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক তরুণীর অপারেশনের পর পেটের ভেতর কাঁচি রেখে সেলাই করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। অপারেশনটি করা হয়েছিল গত বছরের মার্চে। সম্প্রতি মুকসুদপুরের এক হাসপাতালে এক্সরে করা হলে বিষয়টি ধরা পড়ে।

এ ঘটনার ভুক্তভুগী ওই তরুণীর নাম মনিরা খাতুন (১৭)। সে গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর থানার ঝুটিগ্রামের খাইরুল মিয়ার মেয়ে।

এলাকাবাসী, হাসপাতাল ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায় গত বছর পেটে ব্যথার জন্য
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অপারেশন করান মনিরা। অপারেশনের কয়েক দিন পরেই মনিরাকে নগরকান্দা উপজেলার পৈলানপট্টি গ্রামে বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের পরও পেটে ব্যথা ছিল তার।

এরপর মনিরা অন্তঃস্বত্ত্বা হওয়ার পর বাচ্চা নষ্ট হলে তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন স্বামী। এরপরেও বিভিন্ন গ্রাম্য চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু তার পেট ব্যথা কমেনি। গত দু’দিন আগে পেটে অসহনীয় ব্যথা উঠলে তাকে মুকসুদপুরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য আনা হয়। ওই ক্লিনিকে এক্সরের মাধ্যমে চিকিৎসকরা দেখতে পান, মনিরার পেটের মধ্যে একটি ঝকঝকে কাঁচি আছে।

আরও পড়ুন: নির্বাচনে হেরে মসজিদের টিন খুলে নিলেন চেয়ারম্যান প্রার্থী

এ বিষয়ে মুকসুদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকজন চিকিৎসক জানান, আমাদের সন্দেহ হলে তাকে একটি এক্সরে করতে বলি। পরে এক্সরে রিপোর্ট আসার পর কাঁচি দেখতে পাওয়া যায়। কয়েকজন চিকিৎসক বলছেন, গত বছরের ৩ মার্চ একটি অপারেশনের সময় ভুলে তার পেটের ভেতরে এ কাঁচিটি রেখে দেয়া হয়েছিল।

চিকিৎসকরা বলেছেন, ওই কাঁচির হাতলে সামান্য মরচে পড়ে গেছে এবং ওই যুবতীর পেটের ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সাথে জড়িয়ে গেছে এটি। দ্রুত অপারেশন করে কাঁচিটি বের করা না হলে রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে বলে জানান তারা।

তবে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল না হওয়ায় এই অপারেশনে দেরি হবে বলে জানিয়েছেন তার পরিবার। বিষয়টির সঠিক তদন্ত করার জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেসিডেন্সিয়াল মেডিকেল অফিসার মোহাম্মাদ আসাদ উল্লাহ সুমন জানান, আগে আমাদের নিশ্চিত হতে হবে ঘটনাটি এই হাসপাতালে ঘটেছে কিনা। যদি রোগীর কাছে কোনো ডকুমেন্ট থাকে, তাহলে সেই কাগজপত্রসহ একটি আবেদন প্রশাসনিক ভবনে দিলে, হাসপাতাল প্রশাসন সার্জারি বিভাগের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইবে। তবে ওই তরুণীর পরিবার এখনও তাদের হাসপাতালে যোগাযোগ করেনি বলে জানানো হয়েছে।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply