বিজয় দিবস পালন না করে প্রধান শিক্ষকের কুশপুত্তলিকা দাহ

|

সিনিয়র রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ :

সারাদেশ যখন বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী পালনে ব্যস্ত ঠিক সেই সময় সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার রাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগে মানববন্ধন ও কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়েছে। যা নিয়ে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে প্রশাসনসহ সাধারন মানুষের মাঝে।

বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে বেলকুচি উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের ৮নং রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিমের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ঐ স্কুলের গভর্নিংবডির সভাপতি ও সহকারী শিক্ষক মানববন্ধন ও কুশপুত্তলিকা দাহ করেন।

রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জাহিদ হাসান পূর্ণ জানান, বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম কমিটির সাথে কোনো প্রকার পরামর্শ না করে নিজের ইচ্ছামত সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় করেন। তাই তার বিরুদ্ধে এই মানব বন্ধন। তবে বিজয় দিবস পালন না করে কেন মানব বন্ধন করছেন? এমন প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে রাজি হননি সভাপতি।

অত্র বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম বিভিন্ন সময় অনিয়ম করে যাচ্ছে বিদ্যালয়ে কারও তোয়াক্কা করেন না তিনি। ইতিপূর্বে অন্য স্কুলে থাকাকালীন অশালীন আচরণ ও মনগড়া কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এজন্য সবাই মিলে আজ এই মানব বন্ধন করা হয়েছে। বিজয় দিবস কেন পালন করা হলোনা সে বিষয়ে কোন উত্তর দেননি এই সহকারী শিক্ষক।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম বলেন, সম্প্রতি স্কুল সংস্কারের জন্য সরকারি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ থেকে চাঁদা দাবি করেন রাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জাহিদ হাসান পূর্ন ও অত্র বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম। চাঁদা না দেয়ায় তারা কয়েকদিন ধরেই আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছিলেন। রোববার আমি বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলাম দুপুরের দিকে সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জাহিদ হাসান পূর্নর নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন লোকজন নিয়ে স্কুলে প্রবেশ করে আমার ওপর হামলা চালায়।

একপর্যায় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জাহিদ হাসান পূর্ণর মদদে সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম আমার মাথায় উর্পযুপরি আঘাত করেন। অনেক দিন ধরে আমাকে আক্রমনের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এই জন্য আমি নিরাপত্তার কথা ভেবে এবং বিদ্যালয়ের ক্লাস ভালোভাবে মনিটরিং করার জন্য বিদ্যালয়ে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করি। যখন আক্রমণ করে তার কিছুক্ষন আগে দফতরি ইসমাইল হোসেনকে জোর পূর্বক চাপ দিয়ে বিদ্যালয়ের বিদ্যুতের মেইন সুইচ বন্ধ করে দেই। যেন ক্যামেরায় তাদের কর্মকান্ড ধরা না পরে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফজলুল হক বলেন, আজকের ঘটনাটি দুঃখজনক। মহান বিজয় দিবস পালন না করে এমন নেক্কারজনক কাজ করার জন্য অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আগামী রোববারে বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা কমিটির সাথে বৈঠক করব।

বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনিসুর রহমান বলেন, ঘটনাটি আমি মাত্রই জানলাম। এমন ঘটনা ঘটে থাকলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমি এখনি বিষয়টি জানতে একজন অফিসারকে দ্বায়িত্ব দিচ্ছি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply