আব্দুল্লাহ্ তুহিন:
শুধু দেশীয় একটি ব্যাংকের শাখা না থাকায় মালদ্বীপে চরম বিপাকে প্রবাসী বাংলাদেশীরা। কঠোর পরিশ্রমে রোজগারের টাকা কয়েক হাত ঘুরে স্বজনদের কাছে পৌঁছতে গচ্চা দিতে হয় আয়ের বড় একটি আংশ। বাধ্য হয়ে বিকল্প উপায় খুঁজছেন বাংলাদেশিরা। মোটা অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপে সবচেয়ে কঠিন আর পরিশ্রমের কাজ করেন বাংলাদেশিরা। কিন্তু সে অনুযায়ী বেতন পান একেবারেই কম। এমন বাস্তবতা মেনে নিয়েই দেশটিতে কাজ করছেন তারা। এখানেই শেষ নয়, উপার্জিত অর্থ দেশে পাঠাতে গিয়ে লোকসানের মুখে পড়তে হয় বাংলাদেশি শ্রমিকদের। কষ্টের উপার্জন দেশে পাঠাতে চলে যায় চার ভাগের এক ভাগ অর্থই। কারণ, ব্যাংকের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক লেনদেনের জন্য মালদ্বীপের মুদ্রাকে শুরুতেই ডলারে রূপান্তর করতে হয় তাদের।
মালদিভিয়ান রুফিয়ার মান বাংলাদেশি মুদ্রার চেয়ে সাড়ে ৫ গুণের কিছু বেশি। ১ রুফিয়ায় পাওয়া যায় বাংলাদেশি ৫ টাকা ৫৫ পয়সা। রুফিয়া থেকে ডলার আবার ডলার থেকে টাকায় রূপান্তর করতেই শ্রমিকদের ১৬ থেকে ২০ টাকা লোকসান গুনতে হয়। বিষয়টি জানে বাংলাদেশের হাইকমিশনও। মালদ্বীপে বাংলাদেশ হাইকমিশনার রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসানও জানালেন সে কথা। কিন্তু সমাধানে নেয়া হয়নি কোনো কার্যকর উদ্যোগ।
শুধু পরিবারের কাছে টাকা পাঠানোর ঝক্কিই নয় মালদ্বীপ প্রবাসীদের আরেক ভোগান্তির নাম বিমানে দীর্ঘ ভ্রমণ ও বাড়তি খরচ। এবার তাদের জন্য সরাসরি ঢাকা-মালদ্বীপ ফ্লাইট চালু করলো বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস বাংলা। এতে সময় ও খরচ নেমে এসেছে অর্ধেকে।
যাতায়াত খরচ ও সময় নিয়ে স্বস্তি ফিরলেও রেমিটেন্স পাঠাতে হিমশিম খেতেই হচ্ছে মালদ্বীপ প্রবাসী লক্ষাধিক বাংলাদেশিকে। বিকল্প উপায়ে টাকা পাঠানোতে একদিকে যেমন তারা লোকসানের মুখে পড়ছেন অন্যদিকে সরকার হারাচ্ছে বিপুল রাজস্ব।
এদিকে প্রতারণা, হয়রানি ও নির্যাতনে অতিষ্ঠ মালদ্বীপে বসবাসরত বাংলাদেশি শ্রমিকরা। পাসপোর্ট আটকে রেখে কম বেতনে কাজে বাধ্য করার পাশাপাশি রয়েছে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও। হাইকমিশনের অবহেলা ও নজরদারি না থাকায় সম্ভাবনাময় শ্রমবাজারটি হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা করছেন প্রবাসী কর্মীরা। মালদ্বীপ ঘুরে এসে আব্দল্লাহ তুহিনের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের প্রথম পর্বটি পড়ুন এখানে।
/এডব্লিউ
Leave a reply