রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে ডিভাইডার টপকে মাইক্রোবাস চাপা দেয়ার ঘটনায় এনা পরিবহনের বাস চালক মিজানুর রহমান রিপনকে আটক করেছে র্যাব। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন ।
আব্দুল্লাহ আল মোমেন জানান, টাঙ্গাইল থেকে রিপনকে আটক করে ঢাকায় আনা হয়েছে৷ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া মাইক্রোবাসের চালক মামলা করার পর বলেন, বিচার না হলে এমন দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে।
এনা পরিবহনের মালিক ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ যমুনা টিভির সাথে আলাপচারিতায় দাবি করেন, সেই বাস চালককে আটক করেছে র্যাব। এনা পরিবহনের বিরুদ্ধে প্রায়ই এরকম দুর্ঘটনার অভিযোগ প্রসঙ্গে খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, প্রায়ই এমন ঘটনা ঘটে না। যখনই ঘটে তখনপই ব্যবস্থা নেয়া হয়। তাছাড়া আমাদের ট্রেইনার আছে। আমরা অনেক টাকা খরচ করে ট্রেইনার রেখেছি ট্রেনিং দেয়ার জন্য। আমাদের সব ব্যবস্থাই আছে। তবুও মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনা ঘটে যায়। প্রায়ই ঘটে না। তাছাড়া দুর্ঘটনার উপর তো আর আমার হাত নেই।
এর আগে, সন্ধ্যায় খিলক্ষেত থানায় এনা পরিবহন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন আহত মাইক্রোবাস চালক শাহাদাত হোসেন। তিনি দাবি করেন মামলা করার আগে এনা পরিবহন কর্তৃপক্ষ মীমাংসার প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে, তাতে তিনি রাজি হননি। সকালে মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাওয়া এনা পরিবহনের বাসটি ডিভাইডার টপকে বিপরীত দিক থেকে আসা মাইক্রোবাসের ওপরে উঠে যায়। ওভারটেক করতে গিয়ে এই দুর্ঘটনা বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
খিলক্ষেত থানার ওসি মুন্সি সাব্বির আহমেদ বলেন, নিয়মিত মামলার রজু হয়েছে। মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। আমরা সবকিছু খতিয়ে দেখছি যেমন, বাসটি কি চালক বেপড়োয়া গতিতে চালাচ্ছিলেন কিনা, নাকি ব্রেক ফেইল করার কারণে ডিভাইদারের উপর উঠে গেছে কিনা, এমন সকল পারিপার্শ্বিকতাকে আমলেই নিয়েই তদন্ত করছি।
এয়ারপোর্ট রোডে ডিভাইডারের উচ্চতা চার ফুটের বেশি। আর সেটি টপকেই বিপরীত দিক থেকে আসা মাইক্রোবাসটিকে চাপা দেয় এনা পরিবহনের বাসটি। এই ধাক্কায় মাইক্রোবাসের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। ভাগ্যের জোরে বেঁচে যান যাত্রী ও চালক।
বেঁচে যাওয়া চালক দিয়েছেন সেই সময়ের বর্ণনা। এমন দুর্ঘটনার পর নিজের বেঁচে যাওয়া বিশ্বাসই হচ্ছে না মাইক্রো চালক শাহাদাত হোসেনের। তিনি বলেন, রাস্তায় কিছুটা জ্যাম ছিল। তাই আমি আস্তেই চালাচ্ছিলাম গাড়ি। সেটা প্রায় ১০-১৫ কিলোমিটার/ঘণ্টা হবে বড়জোর। এনা পরিবহনের সেই বাস উত্তরার দিকে যাচ্ছিল। এরইমধ্যে রোড ডিভাইডার ভেঙে আমার গাড়ির উপর বাসটি এসে যেন উড়ে এসে পড়ে। তখন ৯ টা ২০ এর মতো বাজে। আমার মাথা ঘুরে উঠলো। কিছুক্ষণ পর মাথা তুললাম। দেখি, সেই বাসের চালক আর নেই। তাছাড়া বাসে আর কাউকেই পাইনি আমরা। পরে এনা পরিবহণের ম্যানেজার এসেছিলেন। গাড়ির মালিক কে, জানতে চান। আমি বলেছি মালিকের সাথে কথা বলতে। মামলা বা মীমাংসার ব্যাপার তিনিই দেখবেন। এটা মারা যাওয়ার মতোই ঘটনা। সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছি আমি।
Leave a reply