টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে ফলো অন পড়েছে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের করা ৫২১ রানের জবাব দিতে নেমে কিউই পেস ডুয়ো ট্রেন্ট বোল্ট ও টিম সাউদির দুর্দান্ত বোলিংয়ে ভয়াবহ ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে মাত্র ১২৬ রানেই গুটিয়ে গেল বাংলাদেশ। টম ল্যাথামের ডাবল সেঞ্চুরি ও ডেভন কনওয়ের সেঞ্চুরিতে টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষেই একটা ম্যাচ থেকে যতোটা ছিটকে যাওয়া যায়, বোল্ট-সাউদির সুইং ততোটাই ব্যাক ফুটে ঠেলে দিয়েছে টাইগারদের। টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে ৩৯৫ রানের লিড পেয়েছে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড।
মাত্র ১ টেস্টের ব্যবধানে ক্রাইস্টচার্চেই মুদ্রার উল্টোপিঠ দেখতে হলো বাংলাদেশকে। নিউজিল্যান্ডের করা ৫২১ রানের জবাবে তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের টপ অর্ডার। দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে না পারায় ২৭ রানে ৫ ব্যাটারকে হারায় বাংলাদেশ। মূলত তখনই মেরুদণ্ড ভেঙে যায় সফরকারীদের।
ইনিংস বদলের সাথে সাথে যেন বদলে যায় উইকেটের চরিত্রও। ক্রাইস্টচার্চেও তার ব্যতিক্রম নয়। ল্যাথাম-কনওয়েররা যেখানে ব্যাট হাতে ছড়ি ঘুরিয়েছেন, ইনিংস বদলে সেখানেই চিত্রনাট্য নিজেদের করে নেন বোল্ট-সাউদি। ৭ রানে ওপেনার শাদমানের বিদায়ের পর শততম ক্রিকেটার হিসেবে অভিষিক্ত মোহাম্মদ নাঈম কাছে দুর্বোধ্য ঠেকেছে টিম সাউদি। অভিষেকেই তাই শূন্য করার তিক্ত অভিজ্ঞতা হলো এই বাঁহাতি ব্যাটারের। অন্যদিকে ট্রেন্ট বোল্টের লেট সুইংয়ের জবাব ছিল না নাজমুল শান্তের কাছে। সাউদির ফুলার লেংথের ডেলিভারি শূন্য রানেই থামিয়ে দেয় বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুলকে। ১১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে প্রতিরোধের দেয়ালের প্রায় পুরোটাই ভেঙে পড়ে সফরকারীদের।
ক্রাইস্টচার্চের কন্ডিশন ও উইকেট যে মিরপুরের স্লো-লো কন্ডিশনের একদমই বিপরীত, তা যেন স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে ব্যাটারদের সংগ্রামে। নামের প্রতি আজ সুবিচার করতে পারেননি লিটন দাস। স্রোতের বিপরীতে প্রতিরোধের কিছুটা চেষ্টা ছিল ইয়াসির আলী রাব্বি ও নুরুল হাসান সোহানের জুটিতে। রক্ষণের বিকল্প হিসেবে পাল্টা আক্রমণেই বরং খানিকটা সফল এই জুটি। ইয়াসির আলী রাব্বি সন্দেহাতীতভাবে ট্রেন্ট বোল্টকে সামলেছেন সবচেয়ে দক্ষতার সাথে। টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ৫৫ রানে কাইল জেমিসনের প্রথম শিকারে পরিণত হন তিনি। তার আগেই অবশ্য টিম সাইদির অ্যাঙ্গলিং ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হন নুরুল হাসান সোহান ব্যক্তিগত ৪১ রানে। ইয়াসির-সোহানের ৬০ রানের জুটিতেই যেন আব্রু কিছুটা হলেও রক্ষা পায় টাইগারদের।
বাকিরা যাওয়া আসার মিছিলে থাকলে ১২৬ রানে থামে মুমিনুল হকের দল। মাত্র ৪১.২ ওভার স্থায়ী হয় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। ট্রেন্ট বোল্ট নিয়েছেন ৪৩ রানে ৫ উইকেট। আর এই মাইলফলক স্পর্শের সাথে আরও বড় এক অর্জনে নাম লেখালেন এই বাঁহাতি পেসার। টেস্ট ক্রিকেটে ৩০০ উইকেট প্রাপ্তি যে একজন পেসারের জন্য স্বপ্নের সমতূল্য! তার পেস বোলিং পার্টনার টিম সাউদি নিয়েছেন ৩ উইকেট। এই দুজনের উইকেট প্রাপ্তির ধারাটিও বেশ চমৎকার: বোল্ট-সাউদি-বোল্ট-সাউদি-বোল্ট-সাউদি-বোল্ট!
এর আগে ১ উইকেটে ৩৪৯ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে নিউজিল্যান্ড। ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্টে সেঞ্চুরি তুলেন নিয়ে ১০৯ রানে ফেরেন ডেভন কনওয়ে। ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে নামা রস টেলরকে ২৮ রানে থামান এবাদত। দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নেয়া কিউই অধিনায়ক টম ল্যাথামকে ২৫২ রানে ফেরান মুমিনুল। টম ব্লান্ডেলের ঝড়ো ৫৭ রানে ভর করে ৫২১ রানে ইনিংস ঘোষণা করে নিউজিল্যান্ড।
আরও পড়ুন: খাজাকে দলে চান কামিন্স
Leave a reply