গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ের সরকারি পুরনো বই গোপনে নিলামে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। ৩টি গুদামে সংরক্ষিত বইগুলো নিলামে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে বলে দাবি করেছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এইচ. এম. মাহাবুবুল ইসলাম। তবে এসব বই তিনগুণ বেশি দামে কিনেছেন বলে জানিয়েছেন নিলামে অংশ নেয়া দিশা ট্রেডার্সের ব্যবসায়ীরা।
রোববার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে সাদুল্লাপুর উপজেলা পরিষদের সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ভবনের স্টোর রুম থেকে বইগুলো ট্রাক ভর্তি করার সময় ঘটনাটি জানাজানি হয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে দেখা যায়, ১০-১২ জন শ্রমিক গুদাম থেকে পুরাতন বইগুলো ট্রাক ভর্তি করছে। জানতে চাইলে বই নিতে আসা দুই ব্যববসায়ী জানান, ২০১৬ থেকে ২০২০ শিক্ষাবর্ষের পুরনো বই ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকায় নিলামে কিনেছেন। তাদের ভাষ্যমতে, গত ১৬ জানুয়ারি নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে শহরের দিশা ট্রেডার্সের কাছে ৩-৪টি গুদামের সংরক্ষিত বইগুলো বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অফিসে গিয়েও পাওয়া যায়নি সাদুল্লাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এইচ. এম. মাহাবুবুল ইসলামকে। তবে মুঠোফোনে তিনি বলেন, গত ১৬ জানুয়ারি তিনটি গুদামের সংরক্ষিত বই বিক্রির নিলামে ৫ জন দরদাতা অংশ নেয়। পরে সর্ব্বোচ্চ দরদাতার কাছে ১০ টাকা কেজি দরে মোট ৫০ হাজার টাকায় বইগুলো বিক্রি করা হয়। এ সময় গোপন চুক্তি ও উৎকোচের বিনিময়ে বই বিক্রির অভিযোগ এড়িয়ে বলেন, বিষয়টি নিয়ে আপনাদের সঙ্গে নিলাম ক্রেতারা যোগাযোগ করবেন।
আরও পড়ুন: ভুয়া কাবিননামায় বিধবাকে প্রতারণা, এসআইয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি
এদিকে, বই বিক্রির বিষয়ে ভিন্ন কথা বলছেন সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. রোকসানা বেগম। তিনি বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পুরনো বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের বইগুলো ২৫ হাজার টাকায় বিক্রির কথা জানান। এ নিয়ে বিভিন্নভাবে তার কাছে নানা অভিযোগও আসে। পরে নিলামে বই বিক্রি বন্ধের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ৩-৪টি গুদামে মাধ্যমিক পর্যায়ের পুরনো বিভিন্ন শিক্ষা বর্ষের বিপুল পরিমাণ বই মজুদ আছে। এসব বইয়ের বাজার মূল্য ৪-৫ লাখ টাকার বেশি হবে বলছেন সচেতন মহল। স্থানীয়সহ অনেক অভিভাবকই বলছেন, গোপন চুক্তিতে বই বিক্রি করায় সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হলেও পকেট ভারী হয়েছে শিক্ষা কর্মকর্তা এইচ. এম. মাহাবুবুল ইসলামের। এর আগেও ঘুষ-দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগে বদলি হয়েছিলেন তিনি। তাই বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে খতিয়ে দেখার দাবি তাদের।
এসজেড/
Leave a reply