ডরোথি তাসরিন:
লন্ডনে নিলামে উঠছে বিরল এক কালো হীরা। যা আলোড়ন তুলেছে শৌখিন সংগ্রাহকদের মাঝে। নিলামের আগে বিভিন্ন দেশে প্রদর্শন করা হচ্ছে এই ব্ল্যাক ডায়মন্ড।
৫৫৫ দশমিক ৫৫ ক্যারেটের রত্নটির নাম ‘দ্য এনিগমা’। তবে এর গঠন-উৎস নিয়ে আছে নানা মত। অনেকের দাবি, হীরাটি এই পৃথিবীরই না। রহস্যময় ‘এনিগমা’ কার সংগ্রহশালায় শোভা পাবে; তা নিয়েও চলছে জল্পনা।
ফেব্রুয়ারিতে লন্ডনে নিলামে উঠবে ৫৫৫.৫৫ ক্যারেটের এই ব্ল্যাক ডায়মন্ড। নিলামের প্রস্তুতি হিসেবে এখন তা ঘুরছে বিশ্বজুড়ে। দুবাইয়ের পর লস অ্যাঞ্জেলসের বেভারলি হিলসে প্রদর্শিত হচ্ছে ‘দ্য এনিগমা’।
কার্বোনেডো হিসেবে পরিচিত ব্ল্যাক ডায়মন্ড পৃথিবীতে খুবই বিরল। কেবল ব্রাজিল ও মধ্য আফ্রিকা রিপাবলিকেই পাওয়া যায় এটি। তবে উৎপত্তি আর গঠন নিয়ে ধোঁয়াশার হীরাটিকে দিয়েছে বাড়তি গুরুত্ব। ধারণা পৃথিবী গঠনের শুরুর দিকেই উৎপত্তি এই হীরার।
ভূ-তত্ত্ব ও খনি বিশেষজ্ঞ ড. অ্যারন সেলেস্তিয়ান বলেন, কার্বোনেডো বেশিরভাগ ২৬০ থেকে ৩২০ কোটি বছরের পুরোনো। যেখানে পৃথিবীর বয়স আনুমানিক ৪৬৫ কোটি বছর। অর্থাৎ টেকনোটিক প্লেট আর বায়ুমণ্ডলের সৃষ্টি যখন, তখনই উৎপত্তি হয় এই ডায়মন্ডের।
অনেকের ধারণা, কোনো গ্রহাণু বা বিশাল উল্কাপিণ্ডের আঘাতে ভূপৃষ্ঠের কার্বন পরিণত হয়েছিল কার্বোনেডে। কেউ কেউ আবার মনে করেন, মহাশূন্য সৃষ্টির পর পৃথিবীতে পড়েছিল কালো হীরা। সেকারণেই অনন্য ‘দ্য এনিগমা’।
ড. অ্যারন সেলেস্তিয়ান আরও বলেন, আইসোটোপ আর হাইড্রোজেন উপাদান থেকে ধারণা করা যায় এগুলো মহাশূন্যেই তৈরি। এরপর ভূ-পৃষ্ঠে পড়েছে। যদি পৃথিবীতে সৃষ্টি হয়, তবে ধরে নিতে হবে সাধারণ হীরার তুলনায় বহুগুণ গভীরে সৃষ্টি। যেটাই হোক, উপাদান নিয়ে গবেষণা হলে দুর্দান্ত কিছু বেরিয়ে আসবে।
নিলামকারী প্রতিষ্ঠান সথেবি’জ জানাচ্ছে, ২০ বছর আগে ‘দ্য এনিগমা’ বর্তমান মালিকের হাতে আসে। এতদিন তিনি বিষয়টি চেপে রাখেন। মালিকের নাম পরিচয় কিংবা হীরাটি তিনি কীভাবে পেয়েছেন তা গোপন রেখেছে সথেবি’জ। নিলামের খবরে নড়েচড়ে বসেছে দেশে দেশের জাদুঘর কর্তৃপক্ষ আর ব্যক্তিগত সংগ্রাহকরা।
সথেবিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পিটার ক্লোমান বলেন, এটা সাধারণ হীরা নয়। যেগুলো গয়না তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এটা এতোটাই বিরল যে, শুধু জাদুঘরেই শোভা পায়। তবে ব্যক্তি পর্যায়েও যে কেউই অংশ নিতে পারবে নিলামে।
ধারণা করা হচ্ছে, নিলামে ‘দ্য এনিগমা’র দর ৪০ লাখ থেকে ৭০ লাখ ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে। আর ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমেও থাকছে মূল্য পরিশোধের সুযোগ।
ইউএইচ/
Leave a reply