স্টাফ রিপোর্টার, নেত্রকোণা:
নেত্রকোণার মদন উপজেলার ধুবাওয়ালা বাজারের একটি মসজিদের নাম পাল্টে স্ত্রীর নামে নামকরণ করার অভিযোগ উঠেছে সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হেলাল উদ্দিন তালুকদারের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি সেই মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নাম দিয়েছেন নিজের ছেলের। এ ঘটনার পর এলাকাবাসী বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে ওই উপজেলার ধুবাওয়ালা গ্রামবাসীর উদ্যোগে ও সরকারি অর্থায়নে বায়তুন নুর জামে মসজিদের পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ২০২১ সালে নির্মাণকাজ শেষে হলে সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হেলাল উদ্দিন তালুকদার মসজিদের আগের নাম পরিবর্তন করে ‘হাজেরা হেলাল বায়তুন নুর জামে মসজিদ’ নামকরণ করেন।
তার ছেলে পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর-রশীদকে প্রতিষ্ঠাতা করে একটি নামফলকও মসজিদের ওয়ালে স্থাপন করেন তিনি। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। হেলাল উদ্দিন তালুকদারের ছেলে হারুন অর-রশীদ মাদারীপুর জেলা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, মসজিদের নামে তিন লাখ টাকার সরকারি অনুদান কোন খাতে ব্যয় হয়েছে অধিকাংশ মুসল্লিগণ তা জানেন না। এ নিয়ে এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দফতরে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মসজিদের ওয়ালে একটি নামফলক লেখা হয়েছে। সেখানে লেখা রয়েছে- ‘হাজেরা হেলাল বায়তুন নুর জামে মসজিদ, প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ হারুন অর-রশীদ।’
এ সময় ধুবাওয়ালা বাজারের কাজল মিয়া, আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমরা যতটুকু জানি গ্রামের সব মানুষের সহযোগিতায় মসজিদটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে কমান্ডার কীভাবে মসজিদের নাম পরিবর্তন ও ছেলেকে প্রতিষ্ঠাতা করেছেন তা আমরা জানি না। বায়তুন নুর জামে মসজিদ নামটিই সুন্দর ছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হেলাল উদ্দিন তালুকদার বলেন, মসজিদের জায়গাটি আমি ও এলাকাবাসী দিয়েছেন। বিভিন্ন জায়গা থেকে অনুদান এনেছি। মসজিদের নামকরণের বিষয়টি আমার দেয়া নয়। এলাকার মুসল্লিদের মতামতের ভিত্তিতে নামকরণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় গ্রামের কিছু লোকজন এমন মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।
তার ছেলে হারুন অর-রশীদ বলেন, একসময় বৃষ্টিতে ভিজে এ মসজিদে নামাজ আদায় করা হতো। মুসল্লিদের অনুরোধে বিভিন্ন জায়গা থেকে অর্থ সংগ্রহ করে আমার বাবা মসজিদটির কাজ সম্পন্ন করেছেন। সবার মতামতের ভিত্তিতেই মসজিদের নামকরণ ও প্রতিষ্ঠাতা লেখা হয়েছে। ইউপি নির্বাচনে গ্রামের প্রার্থী পরাজিত হওয়ায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাদের বিরুদ্ধে একটা মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ জানান, এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a reply