মৌলি ইসলাম:
কানাডায় শিগগিরই টিকা বিরোধী আন্দোলন বন্ধ না করলে কঠোর অবস্থানে যাবে সরকার। করোনামুক্ত হয়েই সোমবার পার্লামেন্টে দেয়া প্রথম ভাষণে স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
এরই মধ্যে বিক্ষোভস্থলে ধরপাকড় এবং জরিমানা আদায় শুরু করেছে পুলিশ প্রশাসন। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ‘গো ফাউন্ড মি’ ওয়েবসাইট। এই সাইটের মাধ্যমেই আন্দোলনে অর্থায়ন করছিল বেশকিছু ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান।
দ্বিতীয় সপ্তাহে গড়িয়েছে কানাডায় চলমান ভ্যাকসিন এবং করোনা শিষ্টাচার বিরোধী আন্দোলন। ট্রাক চালকদের শুরু করা বিক্ষোভ-সমাবেশে যোগ দিয়েছেন অন্যান্য শ্রেণি-পেশার মানুষও। অভিযোগ, মহামারির অজুহাতে জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার।
আন্দোলনকারীরা জানান, বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাহীন, যুক্তি ছাড়া করোনা বিধিমালা মেনে চলছি। প্রধানমন্ত্রীর বোঝা উচিত, দু’বছরে আমরা বিরক্ত। গণতান্ত্রিক অধিকারের দাবিতেই রাস্তায় এতো মানুষ।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় সোমবার রাজধানী অটোয়ায় জরুরি অবস্থা জারি করে প্রশাসন। যার আওতায় নীতিমালা লঙ্ঘনকারীদের গ্রেফতারের পাশাপাশি করা হয় জরিমানা।
অটোয়ার পুলিশ প্রধান পিটার স্লোলি বলেন, আন্দোলনের অজুহাতে যারা নীতিমালা ভঙ্গ করেছে, এমন ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অপরাধ আইনে মামলা দিয়েছে পুলিশ। ট্রাক-ভারি যানবাহন নিয়ে সড়ক অবরোধকারী অন্তত ৫০০ জনকে জরিমানা করা হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে ‘গো ফাউন্ড মি’ ওয়েবসাইটও। সুতরাং অর্থায়নের এক কোটি ডলার হাতে পাচ্ছেন না বিক্ষোভকারীরা।
এদিকে, আন্দোলনকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো। কোভিড আক্রান্ত হওয়ায় ছিলেন আইসোলেশনে। সুস্থ হওয়ার পর প্রথম পার্লামেন্ট অধিবেশনেই বলেছেন, দ্রুত বিক্ষোভে ইতি না টানলে; কঠোর হবে সরকার।
জাস্টিন ট্রুডো বলেন, মহামারির কারণে দু’বছরে সবাই বিরক্ত। অথচ পরিবার রেখে কোভিডের বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছেন ফ্রন্টলাইনার্সরা। তবুও মাস্ক পড়ার প্রতি রয়েছে উদাসীনতা। করোনা শিষ্টাচার না মেনে জন্মদিন পালন করছেন সবাই; যোগ দিচ্ছেন উৎসব-সমাবেশে। তার ওপর এই ভ্যাকসিন বিরোধী আন্দোলন। শিগগিরই এটি বন্ধ হওয়া জরুরি। নতুবা কঠোর হতে বাধ্য হবে সরকার।
গেলো মাসেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় ফেরা ট্রাকচালকদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেনটাইনে থাকার বিধিমালা চালু করে সরকার। একইসাথে বলা হয়, নিতে হবে পূর্ণাঙ্গ ডোজ ভ্যাকসিন। যার বিরুদ্ধে ২৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় বিক্ষোভ-প্রতিবাদ। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুসারে, দেশটির ৮৩ শতাংশ মানুষ গ্রহণ করেছেন ভ্যাকসিন।
ইউএইচ/
Leave a reply