কোটা সংস্কার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের অপেক্ষায় এখন সংসদের দিকে তাকিয়ে সবাই। আজ বুধবার বিকাল ৫টায় জাতীয় সংসদের অধিবেশন শুরু হয়েছে। প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী কোটা ইস্যুতে প্রথমবারের মতো সরাসরি কথা বলবেন।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বুধবার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্ব আছে। সেখানে এই কোটা প্রসঙ্গ চলে আসতে পারে। সেখানে দেখুন প্রধানমন্ত্রী কী বলেন।’
এর আগে আজ দুপুরে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের বরাতে জানা গেছে, সরকারি চাকরিতে কোনো ধরনের কোটা থাকবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আন্দোলনকারীরাও জানিয়েছেন, শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা পেলেই তারা আন্দোলন প্রত্যাহার করবেন।
এদিকে চলমান আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়েছে রাজধানী ঢাকার রাস্তাঘাট। যানজটে নাকাল রাজধানীবাসীও দ্রুত এ সমস্যার শান্তিপূর্ণ সুরাহা চান।
বুধবার সকাল থেকেই কোটা পদ্ধতি সংস্কারসহ ৫ দফা দাবিতে আবারও আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। সকাল ১০টায় টিএসসিতে জড়ো হয়ে শুরু করেন বিক্ষোভ মিছিল। মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে জড়ো হন তারা। সেখান থেকে আবার টিএসসিতে এসে বিক্ষোভ করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও চলছে সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি। রাস্তায় নেমেছেন রাজধানীর বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। এতে ঢাকার অনেক রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনকে যৌক্তিক উল্লেখ করে এর সাথে সহমত জ্ঞাপন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান। বলেছেন, সময়ের সাথে সাথে কোটা ব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কার করা উঠিত। এজন্য দ্রুত সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের দাবির সাথে একাত্মতা জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতিও। দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান সমিতির নেতারা। এসময় কোটা সংস্কারের দাবি বাস্তবায়ন ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিধানে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
দুপুরে, ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন প্রধানমন্ত্রীর বরাতে জানান, সরকারি চাকরিতে কোনো ধরনের কোটা থাকছে না। প্রথমে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে জানালেও পরে এ বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন তারা।
তবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা আসার আগ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’র আহ্বায়ক হাসান আল মামুন যমুনা অনলাইনকে জানান, “আমরা ছাত্রলীগ নেতাদের বক্তব্য শুনেছি। কোনো ধরনের আশ্বাসের ওপর নির্ভর করে আমরা আন্দোলন থেকে সরে আসছি না। আমরা প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট ঘোষণা চাই।”
কী বলবেন প্রধানমন্ত্রী-সেদিকেই এখন তাকিয়ে আছেন শিক্ষার্থী-শিক্ষক-অভিভাবকসহ দেশের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
যমুনা অনলাইন: টিএফ
Leave a reply