মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সিন্ডিকেটমুক্ত করার আহ্বান টিআইবি ও টিআইএমের

|

ছবি: সংগৃহীত

আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া:

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও সিন্ডিকেটমুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুই শাখা টিআইবি ও টিআইএম (মালয়েশিয়া)। ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের বিস্তারিত বিষয়সমূহ জনসাধারণের জন্য প্রকাশেরও আহ্বান জানিয়েছে তারা।

মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) টিআইবি ও টিআইএম যৌথভাবে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণসহ সম্ভাব্য সব দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুই দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, যেনো দেশের শ্রমিক এবং মালয়েশিয়ার নিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষিত হয়।

সাম্প্রতিককালে দুই দেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের বরাত দিয়ে টিআইবি এবং টিআইএমের পক্ষ থেকে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সিদের (বিআরএ) একটি অংশ তাদের মালয়েশীয় সহযোগীদের অসাধু প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় প্রবাসী কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়াকে কুক্ষিগত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। অথচ দুই দেশের সরকার জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট এই সমঝোতা স্মারকের বিষয়বস্তু ও শর্তাদি প্রকাশে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এই গোপনীয়তা উভয় সরকারের দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ ও তথ্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় অঙ্গীকারের পরিপন্থী। শুধু তাই নয়, সমঝোতা বিষয়ক তথ্য প্রকাশে অনীহা সম্ভাবনাময় এই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে মুষ্টিমেয় রিক্রুটিং এজেন্সির হাতে চলে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে। এর পেছনে দুই দেশের প্রভাবশালী স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী কলকাঠি নাড়ছে বলেও বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে ১৫০০ এর বেশি আগ্রহী ও আইনিভাবে অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সি থাকা সত্ত্বেও মাত্র ২৫টি প্রভাবশালী বিআরএ ও তাদের প্রত্যেকের অধীন ১০টি করে সাব-এজেন্ট প্রতিষ্ঠানকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক পাঠানোর সুযোগ দেয়ার অসাধু পরিকল্পনা এরই মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সমঝোতা স্মারকের বিষয়বস্তু নিয়ে গোপনীয়তার ফলে যে কারসাজির সুযোগ তৈরি হয়েছে তা শুধু এজেন্সি নির্বাচনের উন্মুক্ত এবং ন্যায্য প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়ার বাধ্যতামূলক বিধানগুলোকেই লঙ্ঘন করবে না, একই সঙ্গে জবাবদিহিতার সুযোগকেও সীমিত করবে এবং বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিকের অভিবাসন ব্যয় ও তাদের মালয়েশিয়ান নিয়োগকর্তাদের কর্মী নিয়োগ ব্যয় বাড়িয়ে দেবে।

নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একই ধরনের সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণসহ দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৮ সালে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনসাধারণের তথ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে সমঝোতা স্মারকটি বিশদভাবে প্রকাশ এবং দুই দেশের জাতীয় পর্যায়ে এবং যৌথভাবে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে আমরা আমাদের নিজ নিজ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, যেনো প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের অসাধু কূটকৌশল আবারও মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি অভিবাসন কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়াকে জিম্মি করতে না পারে।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply