মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে বিয়ের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের তালিকা ছোট করতে হয়েছে। তারপরও হাজার দুয়েক অতিথি উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে। আর সেই অনুষ্ঠানে মেয়ে ও তার জামাইকে আশীর্বাদ করলেন মৃত বাবা। এমনটাই হয়েছে দীনেশ এসপি ও জনগানন্দিনীর বিয়েতে। পারিবারিক ঐতিহ্য এবং প্রযুক্তির মিশেলে এক অভিনব বিয়ের আয়োজন করা হয় তাদের। আর এর সৌজন্যে ছিল ‘মেটাভার্স’।
দ্য ট্রিবিউন ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভারতের তামিলনাড়ুর শিবলিঙ্গপুরমের দীনেশ ও জনগানন্দিনীর বিয়ে ছিল। ছোট্ট আদিবাসী গ্রামের বিয়ের অনুষ্ঠানে দূর-দূরান্তের সব অতিথিরা হাজির হয়েছিলেন। সবাই একসাথে আনন্দ উদযাপন করেন, নবদম্পতিকে আশীর্বাদও করেন তারা। যদিও তারা সবাই নিজ বাড়িতে বসে করেছেন এসব। আর এই সবই হয়েছে ‘মেটাভার্স’র কারণে।
মেটাভার্স এমন এক ভার্চ্যুয়াল দুনিয়া যেখানে অগমেন্টেড রিয়্যালিটি, ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটি, হলোগ্রামের থ্রি-ডি অবতার, ভিডিও এবং জনসংযোগ রয়েছে। মেটাভার্সের সাথে যারা সংযুক্ত থাকবেন তারা তাদের বন্ধুদের সাথে পুরো বিশ্বে ভার্চ্যুয়াল ট্যুরে যেতে পারেন, কনসার্ট যেতে পারেন। একে অপরের সাথে যোগাযোগ রাখতে পারেন এবং অন্যান্য সব অনুষ্ঠানে একসাথে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দিতে পারেন।
তামিলনাড়ুর ওই যুগলের বিয়ের অনুষ্ঠান তেমনই ছিল। পাত্রের ভাষ্যমতে, করোনার জন্য বিয়েতে মাত্র একশ’ জনকে নিমন্ত্রণ জানিয়েছেন তারা। কিন্তু অনুষ্ঠানে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের সবাইকে রাখতে চেয়েছিলেন তিনি। এ কারণে মেটাভার্সে অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নেন। আর তিনি নিজে ‘ব্লকচেন টেকনোলজি’তে কাজ করছেন বলে জানান।
বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার জন্য আমন্ত্রিত অতিথিদের কাছে ছিল স্মার্টফোন, ট্যাব কিংবা ল্যাপটপ। মন্ত্র পড়ে বিয়ের পরই ল্যাপটপে লগ-ইন করেন পাত্র-পাত্রী। সেখানে তারা আনন্দে মেতে উঠেন। এ জন্য পুরো বিয়ের ডিজাইন হোস্টিংয়ে খরচ হয়েছে দেড় লাখ রুপি।
জনগানন্দিনী বলেন, ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে তার মৃত বাবা ছিলেন। আমি জানি, আমাদের দু’জনকে আশীর্বাদ করেছেন বাবা। আর দীনেশ জানান, গত বছরের এপ্রিলে তার শ্বশুর মারা গেছেন। তিনি রোবটিক্স নিয়ে লেখাপড়া করেছেন। এ জন্য তার থ্রিডি অবতার তৈরি করেছেন তিনি। এটা কেবল মেটাভার্সেই সম্ভব।
/এনএএস
Leave a reply