কানাডায় ট্রাক চালকদের বিক্ষোভের জেরে বন্ধ হয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি স্থল বন্দর। এতে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে দেশ দুটির আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। বিক্ষোভ দমনে ট্রুডো প্রশাসনকে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করার পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ভ্যাকসিন বাধ্যতামূলক করার প্রতিবাদে কানাডায় শুরু হওয়া ট্রাক চালকদের বিক্ষোভ এখন বড় মাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য। দুই সপ্তাহ ধরে চলা বিক্ষোভের উত্তাপ ছড়িয়েছে মার্কিন সীমান্তেও। বাধ্য হয়ে সেখানে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে টয়োটা এবং ফোর্ডের মতো শীর্ষ গাড়ি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। কানাডার অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, প্রতিদিন ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়েছে ৩০ কোটি মার্কিন ডলার।
কানাডা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে গুরুত্বপূর্ণ ৩টি স্থল সীমান্ত দিয়ে সব ধরণের পণ্য আমদানি-রফতানি বন্ধ হয়ে গেছে। একে অবৈধ অর্থনৈতিক অবরোধ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে জাস্টিন ট্রুডো সরকার। তবে চলমান এই পরিস্থিতির জন্য সরকারের ভুল নীতিকে দায়ী করছে দেশটির বিরোধী দল। এ নিয়ে বাদানুবাদ হয়েছে কানাডার পার্লামেন্টেও। কানাডার বিরোধী দলের আইনপ্রণেতা মেলিসা লান্টসম্যান বলেন, গোটা দেশকে ভুলভাবে পরিচালিত করা হচ্ছে। আমাদের পরিবহন খাতে যেভাবে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে সেটা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারসাম্য রেখে করা হয়নি। অযথা পিসিআর টেস্টের ঝামেলা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। এমন নিয়ম শুধু জি সেভেন ভুক্ত দেশেরগুলোর মধ্যে কানাডা একাই চালু করেছে।
কানাডার পরিবহন মন্ত্রী ওমর আল ঘাবর বলেন, আমরা বিজ্ঞান মেনে কথা বলছি। সেই অনুযায়ী কাজ করছি। কারণ, মহামারির ভয়াবহ রূপ সবাই দেখছে। এখনও হাজার হাজার মানুষ হাসপাতালের বিছানায়। তাই বিজ্ঞান যেভাবে নির্দেশনা দিচ্ছে সেভাবেই চলতে বলা হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমরাও নীতিতে পরিবর্তন আনবো।
মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য বলছে, ট্রাক চালকরা যুক্তরাষ্ট্রের কিছু শহরে অবরোধের পরিকল্পনা করছে। এই অবরোধ দমনে কানাডা সরকারকে সর্বোচ্চ বল প্রয়োগের পরামর্শ দিয়েছে হোয়াইট হাউজ। অটোয়ার পুলিশ প্রধান পেটার স্লোলি বলেন, বেআইনীভাবে যারা এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর হতে বাধ্য হচ্ছি। ১৭’শ এর বেশি মামলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২৫ জনকে আটক করেছি। ১২৬ জনের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের তদন্ত চলছে। এখনও শান্তিপূর্ণভাবে এই আন্দোলন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে আসছি। কিন্তু কেউ কথা শুনছে না।
আরও পড়ুন: করোনা বিধিনিষেধের প্রতিবাদে এবার ফ্রান্সে শুরু বিক্ষোভ
কানাডার ৯০ শতাংশ মানুষ টিকার আওতায় আসার পরও এমন পরিস্থিতি লজ্জাজনক বলে মন্তব্য বিরোধী দলের।
আরও পড়ুন: ভ্যাকসিন বিরোধী বিক্ষোভে একদিনে ক্ষতির পরিমাণ ৩০ কোটি ডলার!
Leave a reply