টিকটকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: যে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন দু’দেশের ইনফ্লুয়েন্সাররা

|

ছবি: সংগৃহীত

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সারদের প্রায়ই রাজনৈতিক নানা ইস্যুতে নীরবতা ও অস্পষ্ট অবস্থান নেয়ার কারণে সমালোচিত হতে দেখা যায়। তবে ইউক্রেনে রুশ হামলার প্রেক্ষাপটে যেন কয়েকজন রুশ সেলিব্রিটি আলোকবর্তিকা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন ডিজিটাল মাধ্যমে। রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যে গতি নিয়ে বর্বরতার সাথে তার দেশকে যুদ্ধের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন তাতে ডিজিটাল মাধ্যমের অনেক ইনিফ্লুয়েনসারই প্রকাশ করেছেন তাদের অস্বস্তি। ইউক্রেনের ইনফ্লুয়েনসাররাও রুশ হামলার মুখে সাহসের সাথে নিশ্চিত করছে, পুতিনের বাহিনী যে ভয়ানক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে তাদের দেশজুড়ে, তা যেন দেখতে পারে সমগ্র ইউরোপ ও বিশ্ব। তবে টিকটকের নিউজফিড অনেকটাই যেন সেজেছে এই যুদ্ধের রঙে। খবর বিবিসির।

রাশিয়ার বেশ কয়েকজন বড় সেলিব্রিটিকে দেখা গেছে প্রকাশ্যে এই যুদ্ধের প্রতিবাদে মুখ খুলতে। মুছে ফেলার আগে ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে ‘যুদ্ধকে না’ লেখা বার্তা লিখেছিলেন পুতিনের প্রেস সেক্রেটারি দিমিত্রি পেসকভের কন্যা। রাশিয়ার অন্যতম বড় তারকা অ্যালা পুগাচেভার স্বামী ম্যাক্স গ্যালকিন ইনস্টাগ্রামে শোকের প্রতীক কালো একটি ছবিতে লেখেন যুদ্ধ বিরোধী বার্তা।

ছবি: সংগৃহীত

ফ্যাশন ডিজাইনার সভেৎলানা তাচ্চোরি তার ফ্যাশন উইকের মাঝে সময় বের করে ইউক্রেনের পতাকা হাতে ছবি তুলে পোস্ট করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। টিকটক ইনফ্লুয়েন্সার লোভা ওলালা তার দুই গালে রাশিয়া ও ইউক্রেনের পতাকা এঁকে ক্যাপশনে লিখেছেন, আমার কিছুই বলার নেই। রুশ সাংবাদিক ইলাইয়া ভারলামভ নিয়মিতভাবে রাশিয়ার বর্বরতার ছবি ও ভিডিও পোস্ট করে যাচ্ছেন।

ইউক্রেনে এখনও যেসব ইনফ্লুয়েন্সাররা থেকে গেছেন, তারা নিয়মিতভাবে প্রকাশ করে যাচ্ছেন এই ভয়াবহতার মুখে কতটা পরিবর্তন এসেছে তাদের জীবনে। গতকাল (২৬ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত আন্না প্রিতুলার ইনস্টাগ্রাম ফিডকে অন্য যেকোনো সময়ের মতো দেখাচ্ছিল। অসম্ভব নিখুঁত কেক, ফুলের তোড়া, লুই ভিটনের ব্যাগের ছবিই ছিল তার অ্যাকাউন্টে। এরপরই পাল্টে যায় তার অ্যাকাউন্ট। বিলাসবহুল হোটেলে গ্ল্যামারাস ছবির জায়গায় চলে আসে লাল ব্যাকগ্রাউন্ডে সাদা একটি লেখা, ‘এখন সময় সকাল ৫টা। ইউক্রেনের এই অংশটিতে আঘাত হানতে উদ্যত রাশিয়া’।

টিকটক ব্যবহারকারীদের অনেকেরই নজর এড়ায়নি যে, এই অ্যাপের ফিড এখন ইউক্রেনে ঘটে চলা নানা ঘটনার ভিডিওতে পূর্ণ। এই অ্যাপের ব্যাপারে বেশি খোঁজখবর রাখা ব্যক্তিরা ধারণা করেন যে, টিকটকের অ্যালগরিদম সাম্প্রতিক ইভেন্ট সম্পর্কে কথা বলা লোকেদের পুরস্কৃত করে। এর মধ্যে কিছু ঠিক ও তথ্যপূর্ণ ভিডিও যেমন আছে, তেমনি আছে ভ্রান্ত তথ্য। ইউক্রেনিয়ান-ব্রিটিশ টিকটকার মার্তা ভাসিউতা সারাদেশজুড়ে রাশিয়ার বর্বর হামলার নানা ছবি ও ভিডিও শেয়ার করে চলেছেন।

কিন্তু যারা সত্যিকার অর্থেই চান ঘটনাগুলোর নির্মোহ প্রকাশ, তারা বিষয়বস্তু পোস্ট করা সঙ্গত কারণেই চালিয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাশিয়ান টিকটকার প্রশিন বলেছেন, আমি মনে করি মানুষের কাছে এটা পরিষ্কার করতে সমর্থ হবো যে, রাশিয়ান মানুষ এবং রাশিয়ান সরকার এক না। কিছু মানুষ সরকারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছে। কিন্তু আমার ব্যক্তিগত ধারণা থেকে বলছি, তাদের সংখ্যা খুবই কম। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষই এই যুদ্ধের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে। তবে পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা তাদের নেই।

আরও পড়ুন: রাজধানী কিয়েভ দখল নিয়ে তীব্র হয়েছে লড়াই

এম ই/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply