ইউক্রেনে চলমান রুশ আগ্রাসনে সবচেয়ে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছে দেশটির শিশুরা। সহিংসতা অব্যাহত থাকলে বিপুল সংখ্যক শিশুর প্রাণহানির আশঙ্কা করছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ।
সংস্থাটি বলছে, হতাহত হওয়ার পাশাপাশি শিশুদের ওপর পড়বে যুদ্ধের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব। বাধাগ্রস্ত হবে তাদের মানসিক বিকাশ। এমন পরিস্থিতিতে সংঘাত বন্ধ করে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন সংস্থাটি। ডয়েচে ভেলের লাইভ আপডেট ও স্টার ট্রিবিউনসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
দেশটিতে চলমান রুশ আগ্রাসনে লাখো শিশু শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হওয়ার পাশাপাশি বাবা-মা হারিয়ে অনেকেই হচ্ছে অভিভাবকহীন। এতে উদ্বিগ্ন ইউনিসেফ।
ইউক্রেনে ইউনিসেফের মুখপাত্র জেমস এলডার বলেন, অনবরত আমরা শিশু মৃত্যুর খবর পাচ্ছি। ইউক্রেনের বাকি শহরগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ছে সংঘাত। তাই আরও শিশু মৃত্যু এবং এতিম হওয়ার সংখ্যা বাড়বে। অনেক পিতাই পোল্যান্ডের বর্ডার গার্ডদের কাছে ছেড়ে আসছে সন্তানদের। ইউক্রেনের বড় শহরগুলোর এতিমখানায় হাজারও শিশু রয়েছে। সেসব জায়গায় এখন বোমা হামলা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বজনদের মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞের দুঃসহ স্মৃতি শিশুদের ওপর ফেলবে দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি হতে হবে তাদের।
জেমস এলডার আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে শিশুদের মানসিক বিপর্যয় সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাবে। যেখানে এখন আছি, পুরো জায়গাটাতেই কান্নার রোল পড়ে গেছে। সাত বছরের মেয়েকে বাবার বোঝাতে হচ্ছে, কেন তাকে রেখে বাবাকে যেতে হচ্ছে। দেশ ছেড়ে এমন গন্তব্যে তারা যাচ্ছে, যার সম্পর্কে তারা জানেও না।
এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধ-সংঘাত বন্ধ করে শিশুদের জন্য শান্তিপূর্ণ পৃথিবী গড়তে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
ইউক্রেনের ইউনিসেফের এ মুখপাত্র বলেছেন, আমরা এমন একটা মুহুর্তে দাঁড়িয়ে আছি, যেখানে শিশুরা শিখছে যুদ্ধ কি, সংঘাত কি? সাইরেনের শব্দের সঙ্গে পরিচয় হতে হচ্ছে তাদের। নিজ বিছানার বদলে ঠাই হচ্ছে বোম্ব শেলটার বা বাঙ্কারে। তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে এখনই হানাহানি বন্ধ করা উচিত।
অন্যদিকে, সেভ দ্য চিলড্রেন বলছে, ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে শারীরিক, মানসিক ক্ষতি ও শরণার্থী হবার ঝুঁকিতে রয়েছে দেশটির কমপক্ষে ৭০ লাখ শিশু।
/এমএন
Leave a reply