শ্রীলঙ্কার পথেই কি হাঁটছে বাংলাদেশ? যা বলছেন অর্থনীতিবিদরা

|

ফাইল ছবি।

গভীর সংকটে শ্রীলঙ্কা। অর্থনৈতিক সব সূচকেই হযবরল অবস্থা। প্রায় শূন্য রিজার্ভ ভাণ্ডার, জ্বালানি তেল এবং বিদ্যুতের জন্য হাহাকার অবস্থা। বলা হচ্ছে ভুল নীতিতে দাঁড়িয়ে থাকায় এমন পরিণতি। প্রশ্ন উঠেছে, শ্রীলঙ্কার পথেই কি হাঁটছে বাংলাদেশ? বিশ্লেষকদের ধারণা, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ বরাবরই শক্ত অবস্থানে রয়েছে। তবে প্রকল্প গ্রহণে সতর্কতা এবং মুদ্রা ব্যবস্থায় দক্ষতা দেখাতে হবে।

প্রায় ৪ হাজার ডলারের মাথাপিছু আয়ের একটি দেশের পরিণতি যে এমন হবে তা কল্পনাও করেনি কেউ। উচ্চমধ্যম আয়ের কাতারে পরিণত হওয়া শ্রীলঙ্কা এখন অর্থনৈতিকভাবে প্রায় দেউলিয়া। দক্ষিণ এশিয়ার ভঙ্গুর দেশের নাম এখন শ্রীলঙ্কা।

মানুষের মাথায় বড় অংকের ঋণ দায়, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বড় বাজেট ঘাটতি, প্রায় শূন্য রিজার্ভ নিয়ে এখন দিকভ্রান্ত শ্রীলঙ্কা। দেশটির এমন পরিণতির সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সাদৃশ্য দেখছেন কেউ কেউ। তবে তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, রিজার্ভের দিক দিয়ে শক্ত অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। ভালো অবস্থানে মাথাপিছু ঋণ সূচক। মূল্যস্ফীতিতেও নেই উচ্চ উৎকণ্ঠা। তবে মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় আরও দক্ষতা দেখানো দরকার।

এ নিয়ে অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ডলার রেটটাকে মোটামুটি স্থিতিশীল রাখার জন্য প্রায় ৪০০ কোটি ডলার বাজারে বিক্রি করা হয়েছে। এতে আমাদের রিজার্ভ কিছুটা কমে গেছে। তবে এটি হয়েছে এক বছরের মধ্যে। কিন্তু শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি, বছরের পর বছর তারা একই কাজ করেছে।

অপরিকল্পিত ঋণ নিয়ে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু সেই দায় পরিশোধে ব্যর্থতায় বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশেও বাস্তবায়ন হচ্ছে একাধিক মেগা প্রকল্প। প্রশ্ন হচ্ছে, কতোটা পরিকল্পিতভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে এসব প্রকল্প?

এ নিয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রসঙ্গ তুলে এনেছেন ড. জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের জন্য রূপপুরে এতো ব্যয় করা হলো। এটা অর্থনৈতিকভাবে যৌক্তিক কি না এই একটি প্রশ্ন থেকে যায়। কারণ এই একই ব্যয়ে ভিন্ন বিদ্যুৎ প্রকল্প করলে কম খরচে বিদ্যুৎ পাওয়া যেতো। এই প্রজেক্ট থেকে রিটার্ন আসার আগে যদি আপনার টাকা ফেরত দেয়ার সময় চলে আসে, তাহলেই কিন্তু আপনি বিপদে পড়ছেন।

বলা হচ্ছে, দুই দেশের অর্থনীতির দুর্বল দিক একই। স্বল্প কর, রফতানির ক্ষেত্রে একটি পণ্যের ওপর নির্ভরশীলতা এবং স্বল্প পরিমাণে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ। তবে বাহুল্য কোনো প্রকল্প হাতে নেয়নি সরকার এমনটি দাবি পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের। তিনি বলেন, আজ পর্যন্ত কোনো ঋণের কিস্তিতে আমরা ফেল করিনি।

তবে শ্রীলঙ্কার এমন পরিণতি দেখে দেশটিকে নতুন করে আর ঋণ দিচ্ছে না বাংলাদেশ।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply